
প্রতীকী ছবি
বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করেছে যা প্রাক শিল্প যুগের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। লাখো বছর আগে যখন পৃথিবী একটি হটহাউস সমুদ্রে নিমজ্জিত গ্রহ ছিল তখন থেকে এমন স্তরে দেখা যায়নি বলে গতকাল শুক্রবার (৩ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বিজ্ঞানীরা ঘোষণা করেছেন।
মার্কিন ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলছে, হাওয়াইয়ের মাউনা লোতে সংস্থাটির দীর্ঘকালীন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে মে মাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রায় গড়ে প্রতি মিলিয়নে ৪২১টি পার্টস ছিল।
বিজ্ঞানীরা বলেন, ঊনিশ শতকের শেষ দিকে শিল্প বিপ্লবের আগে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা প্রতি মিলিয়নে ২৮০ পার্টস ছিল। তাই মানুষ বায়ুমণ্ডলকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করেছে।
কিছু অ্যাক্টিভিস্ট ও বিজ্ঞানী প্রতি মিলিয়নে ৩৫০ পার্টস লেভেল চান। কয়লা, তেল ও গ্যাস থেকে শিল্প কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হয়।
বিজ্ঞানীরা বলেন, যখন গ্যাসটির মাত্রা কমার প্রয়োজন তখন সেটি বাড়ছে। এ বছরের কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা এক বছর আগের তুলনায় প্রায় এক দশমিক ৯ পিপিএম বেশি; যা ২০২০ সালের মে থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্তও কিছুটা বেশি।
এনওএএ’র জলবায়ু বিজ্ঞানী পিটার ট্যানস বলেন, বিশ্ব নির্গমন কমানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আপনি এটি দেখতে পাবেন না। অন্য কথায়, আপনি যদি বায়ুমণ্ডল পরিমাপ করেন তবে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এখনো কিছু ঘটতে দেখছেন না।
তিনি বলেন, প্রতি বছর প্রায় ৪০ বিলিয়ন মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত করে আমরা পরিবেশ দূষিত করছি। মানবজাতির কার্যকলাপে নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইডের প্রায় অর্ধেক গাছপালা ও সমুদ্রে শোষিত হয়। বাকি অর্ধেক বায়ুমণ্ডলে জমা থাকে। বায়ুমণ্ডলে এই কার্বন ডাই-অক্সাইড কয়েক হাজার বছর ধরে স্থির থাকে এবং গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে পৃথিবীকে ক্রমাগত উষ্ণ করে তোলে।
আগামী সপ্তাহে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি-৭ সদস্যরা লন্ডনে বৈঠকে বসবেন। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে। কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগগুলো বাগ্বিতণ্ডার মধ্য আটকে আছে।
২০৫০ সালে বৈশ্বিকভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা। এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র ও পেট্রোল চালিত যানবাহন বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন তারা।