ভুবন- ভোলানো সৌন্দর্যের পাখি লাল-মামুনিয়া। ছবি : সারাহ ইলহাম
মুনিয়াদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় হচ্ছে লাল-মামুনিয়া বা লাল মুনিয়া। পাখিটির ইংরেজি নাম Red Avadavat. ভুবন- ভোলানো সৌন্দর্যের কারণে খাঁচার পাখি হিসেবে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে কর্মটি বেআইনি হওয়ায় এই ব্যবসা পড়তির দিকে। সারা দেশে এই পাখিটি কমবেশি দেখা যায়। খোলা মাঠ এবং ঘাসবন এদের আবাসস্থল।
Red Avadavat. নামটির একটু ব্যাখ্যা প্রয়োজন। গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে উপনিবেশ আমলে এই পাখিটি খাঁচার পাখি হিসেবে রপ্তানি হতো। ব্রিটিশরা আহমেদাবাদ শব্দটি সঠিক উচ্চারণ করতে পারত না, তাই এই নামকরণ। ক্ষুদ্র এই পাখিটি দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ১০ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৯ গ্রাম। শরীরের পালকের রং উজ্জ্বল লালের মধ্যে তিলা। পালকের কিছুটা অংশ সবুজ, চোখ ও ঠোঁট লাল এবং পা লালচে। স্ত্রীটির রং বাদামি। বেশ জোরালো ডাক। বিভিন্ন মুনিয়া ঝাঁকের মধ্যে দু-চারটি লাল-মামুনিয়া দেখা যায়। এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকে। এদের প্রধান খাদ্য ঘাসের বীজ। প্রজনন ঋতু জুন-আগস্ট।
লাল-মামুনিয়া উপমহাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বসবাস করছে এবং এদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার লক্ষণ অনুপস্থিত। সে কারণে আইইউসিএন পাখিটিকে বিলুপ্তি হুমকিমুক্ত মনে করে।
বর্তমানে বাংলাদেশে কিছু অবিবেচক পাখি-আলোকচিত্রী বন্য পাখিদের জন্য ক্রমান্বয়ে হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। ছবি তোলার জন্য গাছের ডাল ভাঙা, মানুষ দিয়ে তাড়া করে পাখিকে ফ্রেমের মধ্যে নিয়ে আসা, টাঙ্গুয়া হাওরে এবং সাতছড়িতে ড্রোন উড়িয়ে পাখির ছবি তোলার মতো ঘটনা ঘটছে। এ ব্যাপারে বন বিভাগের অপরাধ দমন ইউনিটের বিশেষভাবে সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। না হলে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা থেকে বন্য পাখিদের আবাসের ধ্বংসযজ্ঞ চলতেই থাকবে।
লেখক: কাজী সানজীদ