সংগৃহীত ছবি
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী অনেক উন্নয়ন করেছেন কিন্তু পরিবহন ব্যবস্থাপনায় 'টোটালি ফেল' করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
আজ রবিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এ কথা বলেন। বক্তব্যে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে সরকারের যোগসাজশ আছে কি না সে প্রশ্নও রাখেন তিনি।
মুজিবুল হক বলেন, সড়ক মন্ত্রীকে বলবো আপনি পদ্মা ব্রিজসহ অনেক উন্নয়ন করেন কিন্তু আপনি টোটালি ফেইল ট্রান্সপোটেশনের বিষয়ে। ২৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স আজকে আটকা। ঢাকা শহরে আজ গাড়ি চলে না। ভালো বাস নেই। সরকারের কি ঢাকা শহরে নতুন ৫০০-১০০০ বাস নামানোর সক্ষমতা নেই?
রাজধানীতে একটি ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনায় নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর নিহতের প্রসঙ্গ টেনে মুজিবুল হক বলেন, একজন ছাত্রী স্কুটি নিয়ে যখন ফ্লাইওভারে ওঠে তখন একটি গাড়ির ধাক্কায় মারা যায়। গত বুধবার কামরুন্নেসা স্কুলের শিক্ষার্থীকে আনতে গিয়ে এক মা পুরনো লক্কড়ঝক্কর ব্রেকহীন বাসের ধাক্কায় মেয়ের সামনে গাড়ির চাকার নিচে পড়ে মারা যায়। মঙ্গলবার মিরপুরে বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারায় সাবিনা ইয়াসমিন।
তিনি আরও বলেন, 'বর্তমান সরকার অনেক উন্নয়নের দাবিদার। হ্যাঁ, উন্নয়ন অনেক করেছে কিন্তু রাজধানী শহর ঢাকায় ট্রান্সপোর্টের একটি নীতিমালা, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা চোখে দেখিনি।'
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ঢাকা শহরে ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। ঢাকা শহরে যেসব বাস চলে তার বেশির ভাগই পুরনো ও লক্করঝক্কর। লাইসেন্স নেই, কোনো আইন মানে না, রাস্তায় যেখানে সেখানে পার্কিং করে রাখে।
পাশের আসনে বসে থাকা জাতীয় পার্টির সাংসদ মসিউর রহমানকে ইঙ্গিত করে মুজিবুল হক বলেন, 'আমার পাশে বসেছেন বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির সভাপতি। উনাদের বলবো, আপনারা মানুষের প্রতি দরদী হোন। যে সমস্ত গাড়ির ব্রেক নেই, পুরনো ইঞ্জিন, রঙ নেই, এগুলো সরকার—কেউ দেখে না। আপনারা সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে জনগণকে কষ্ট দিচ্ছেন।'
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সমালোচনা করে মুজিবুল হক বলেন, তিনি ব্যবসা করেন না। তার অসত্য কথা বলার প্রয়োজন নেই। ১ সপ্তাহ আগে যে বেগুনের দাম ছিল ৪০ টাকা, পরশুদিন বাজারে গিয়ে তিনি দেখেছেন তার দাম ৭০ টাকা। ৩০ টাকার শসা ১০০ টাকা, ৩০ টাকা পেঁয়াজের কেজি ৩৫ টাকা। চিনির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫ টাকা। ৬৩০ টাকার গরুর মাংস ৬৫০ টাকা। শুধু সয়বিন তেলের দাম কমেছে।
জবাবে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান বলেন, চুন্নু সাহেব আমার কলিগ, আমি উনার (মুজিবুল হক) আগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ছিলাম ২ বছর। সে ক্ষোভে কি না বা আমি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি—সে ক্ষোভে কি না বা জনগণের দূরদশা দেখে কি না, কীভাবে উনি বলেছেন আমি বুঝতে পারলাম না। মসিউর রহমান দাবি করেন, ঢাকায় যানজটের কারণে এখন একটি বাস ৩টির বেশি ট্রিপ দিতে পারে না। আয় আগের তুলনায় কমে গেছে। বাসের ফিটনেস আছে কি না, সেটা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিআরটিএ দেখে। ফিটনেস না থাকলে জরিমানা করা হয়, বাস ডাম্প করা হয়।
মসিউর রহমান বলেন, কোনো গাড়ির বিরুদ্দে কোনো অভিযোগ থাকলে তা তাকে বললে তিনি সংসদে বসেই জরুরি ব্যবস্থা নিতে পারতেন।