
বাটিক ছাপার ইতিহাস সম্পর্কে সঠিকভাবে তেমন কিছু জানা যায়নি। তবে ধরে নেওয়া হয় যে, প্রাচ্য দেশসমূহ বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ার জাভা, বালি ও তৎসংলগ্ন এলাকাগুলোতে প্রথম এই কাজের প্রচলন ঘটে। এমন ধারণার অন্যতম কারণ হলো, বাটিক শব্দটি ইন্দোনেশিয়ান ভাষা থেকে এসেছে। এই শব্দটি বাংলা করলে দাঁড়ায় একটি বিন্দু বা একটি ফোঁটা। বিন্দু বিন্দু মোমের সাহায্যেই ইন্দোনেশিয়ান বাটিক করা হতো।

তবে এর উৎকর্ষ ঘটে ইন্দোনেশিয়া থেকে চীন দেশে সপ্তম শতাব্দীর প্রথম দিকে। এছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপের কিছু অংশ, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশে বাটিকের কাজের প্রচলন দেখা যায়।

বাটিকের শাড়ি পড়তে প্রতিদিনের প্রয়োজনে, তেমনি উৎসব-অনুষ্ঠানেও। বিশেষ করে বাটিক প্রিন্টের সিল্কের শাড়ি অতুলনীয়। সালোয়ার -কামিজ-ওড়নাতে বাটিকের অনবদ্য কাজ পোশাকে এনে দেয় ঐতিহ্যের ছোঁয়া।

বাটিক অতি প্রাচীন একটি শিল্প। এ শিল্প প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো। গ্রিক সভ্যতাতেও বাটিক ছাপার কাপড় ব্যবহার হতো বলে নিদর্শন পাওয়া যায়। কেউ কেউ এই মতও প্রদান করেন প্রাচীন মিসরের অধিবাসীরাই এই শিল্পের পথিকৃৎ। এরপর বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে বাটিক শিল্প বিস্তার লাভ করেছে।

কাঠের ওপর করা নকশা রঙে ডুবিয়ে কাপড়ের ওপরে চেপে ধরলে যেন ফুটে ওঠে মনের বায়নাগুলো। এটা–ওটায় ব্লক করে পছন্দের মানুষদের উপহারও দিয়ে থাকেন অনেকে।

তবে ব্লকের কাপড়ের নিতে হয় আলাদা যত্ন, ব্লক করার সময় রাখতে হয় বিশেষ সতর্কতা। যেকোনো কাপড়েই ব্লক প্রিন্ট করা যায়। তবে সুতি, এন্ডি সিল্ক বা এ ধরনের কাপড়ে ব্লকের রং বেশি দিন টেকে।

ব্লক প্রিন্টের রং একটা সময় পর ধীরে ধীরে মলিন হয়ে যেতে থাকে। যত্ন নিলে বেশি সময় টিকে যাবে। সোনালি বা রুপালি রং ব্যবহার করলে তা খুব দ্রুত মলিন হয়ে যায়।

ব্লক প্রিন্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া খুব সহজ। এছাড়া কাঠের ব্লক কিনতে বা পছন্দসই নকশা দেখিয়ে বানিয়ে নেওয়া যায়।
সুন্দরের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরন্তন। সেকারণেই মানুষ সৌন্দর্য বোধের প্রকাশ ঘটায় রং ও নকশার বিভিন্ন ব্যবহারের মাধ্যমে। রঙিন ও প্রিন্টের কাপড় এর মধ্যে অন্যতম। সুদূর অতীতে যখন কাপড় ছাপানোর যন্ত্র ছিলো না তখন মানুষ হাতেই নানাভাবে কাপড় প্রিন্ট করতো। যেমন- ব্লক, বাটিক, টাইডাই ইত্যাদি। সেই প্রাচীনকাল থেকে আজ অবধি এসব কাপড় ছাপানোর পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। আজকের ছবিঘর ব্লক ও বাটিক শিল্পের ইতিকথা নিয়ে।