
প্রতীকী ছবি
সে সমস্ত গলির ঠিকানা কেবল আমার কাছেই লেখা ছিল।
শহরের যেসব এলাকায় বড় হলে যাবো ভেবে রেখেছিলাম
সেই অন্ধকার, শ্যামল পথ, পুরাতন দালানঘাট, ছাড়া ছাড়া সবুজ
স্কুল থেকে ফিরে আসার পথ তোমার, ইকবালনগরের সেসব
বাড়ি থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বের হতো কিশোরেরা-
ধরো তুমি ষষ্ঠ শ্রেণির তন্বী সুষমা, কেউ দিয়েছে চিঠি গুঁজে
কেউ গাছের নিচে বেঞ্চি পেতে; অমৃতে রেখেছে মুঠি বুজে
সে সমস্ত গলির ঠিকানা আমার কাছে লেখা আছে
কেবল আমার কাছেই-কোথায় বাতাসে বিস্কুটের ঘ্রাণ
কোন গলিতে উঁকি দিলে সিনেমার গান
কোথায় কমলা রোদে মেয়েরা চুল আঁচড়ায়
উঠোনে বসে উকুন বাছে গেরস্তবউ
সেসব রাস্তা, যা বড় হয়ে অধিকার করবো বলে ভেবে রেখেছিলাম-
লিপিবদ্ধ করে রেখেছি হদিস তার।
বস্তুত বর্মাশীল থেকে বাস্তুহারা বাইপাস-অন্যের শহর যেন-লুকিয়ে রেখেছিলাম।
তুমি একবার আমাকে নিয়ে দুপুররোদে জিরিয়েছিলে, তাই চিরকালের মতো গ্রন্থিত হলো ছায়াতরু আইল্যান্ডে-
আর নিরালায় সেই নীলচুন ঘর,
যা তুমি রিকশা ক’রে গেলেই হয়ে যেতো শুভ্র নিকোনো শাদা, আর তোমার অভাবে
কাতর নীল, তা সব আমি জমিয়ে রেখেছিলাম নিজের ভূখণ্ড ক’রে নেবো বলে।
বস্তুত সেসব আমি পরিভ্রমণ করতে চেয়েছিলাম।
প্রিয়তম, এ শহরে আমাদের ইতিহাস আর সমৃদ্ধ হলো না
যেমনি তুমি চলে গেলে তাকে ছেড়ে-
বৃষ্টিরাতে কাঁদতে থাকা রিকশার মতো জবুথবু হয়ে
পড়লো সে-নামটাই মুছে গেলো-
অর্থনাশ হলো শহরদল থেকে।
অনেক বছর বাদে ফিরেছো তুমি আজ প্রিয়, অন্য মানুষ,
শহরপ্রান্তে সটান আমি, যেন নীল গাড়ির প্রটোকল,
অথচ স্বপ্নে দেখিনি আর, সেসব মুসাফিরি হদিস
লুকিয়ে ফেলছি আরো গভীরে, তুমি আর যাবে না বলে।