
প্রতীকী ছবি
হাজার বছর আগেকার সংস্কৃত পণ্ডিতেরা শ্লোক লিখতেন, নীতিবাক্য চর্চা করতেন, এমন কি কবিতাও লেখা হতো। একালের অনেক বোদ্ধা-বিশেষজ্ঞ এখন খুঁজে-পেতে সে সমস্ত লেখা প্রকাশ করছেন। প্রাচীনকালে ভারতীয় উপমহাদেশে মুনি-ঋষির এমনই কিছু লেখা পুরোনো দিনের পুঁথিতে মেলে, যেখানে কারও নাম পাওয়া যায়- কারওবা পাওয়া যায় না। তবে এটি ঠিক যে, এ সকল রচনা দীর্ঘদিন আগেকার গুণী সংস্কৃত পণ্ডিতদের জ্ঞান চর্চার অবস্থাটি পরিষ্কার করে পাঠকের কাছে। এখানে এমনই কিছু সংস্কৃত লেখার ভাষান্তর করেছেন সিদ্ধার্থ সুনেত্র দত্ত।
অভিনন্দা
এইভাবেই তাকে আমি দেখেছি
সিল্ক-কাপড়ে দ্রুতই সে ঢেকে ফেললো তার
কোমর আর বেঁধে নিলো প্রবল প্রেমের খেলায়
আলগা হওয়া কেশ; গাঢ় নিঃশ্বাসে বুঝেছি
ওর স্তনে আমারই নখের গভীর সব আঁচড়।
স্মৃতিতে সেই সবল শরীর, সঙ্গমের সুখ-
এইভাবেই যাকে আমি দেখেছি, আ-নত-মুখ।
চলঞ্চি অত্রি
খেদ
আহা, হে বেদী মূল- প্রণয়ে হলে ঠাসা
ঋষি-মুনি যায় চলে, মেটে না মনের আশা
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে যাও যদিও সরে-
তবুও তুমি রবে জানি, আমারই এ অন্তরে।
প্রিয়তমা
প্রিয়তমা, আমাদের আলিঙ্গনে ধরা উঠিছে জেগে
সূর্যদেব যেন ফের হলো লাল,
তুমি আমি আমাদের পৃথিবী হোক সবুজ।
তোমার দীপ্ত চাহনীর দ্যুতিতে ভিজুক মন
প্রকৃতির সজীবতা বেড়ে যাক- তুমি নিশ্চুপ
এই সমস্ত চাওয়া হোক পূর্ণ, পূর্ণতা পাক;
জ্ঞান
জেনেছে যে সর্বভূত
তার অন্তরে বইছে তা
ভূমি-আকাশ সবই তাহার
নেই কিছু আর অজানার।
প্রেমিক
তুমি উত্তপ্ত আগুনে দিলে ঝাঁপ
পারো তো নাও মন ভরে
হৃদয়-মনের সব উত্তাপ;
অন্তর বলে যা কিছু সব-
তা তোমারই থাক
তা তোমারই থাক
সিন্ধু
হে নদ সিন্ধু-
আমি তোর সন্তান;
মহেঞ্জোদারোর মতো বেড়ে ওঠা
আমি তোর ভক্তির সন্তান-
আরাধনা করে আজ এসেছি
তোর তীরে বানাবো ঘর
হে নদ সিন্ধু,
হে ঈশ্বর!
হাসি
যে হৃদয় ফেটে পড়ে হাসিতে
তার চঞ্চলা মন হোক পবিত্র
প্রভু, তোমার স্তুতিতে হোক সে
পূণ্যমন ও দীর্ঘ স্বপ্নকামী।
বিদ্যা-অবিদ্যা
বিদ্যা এবং অবিদ্যাতে
মিল খুঁজে কে পায়
গুণী-মুনি সত্যনিষ্ঠ
এ-কথা সুনিশ্চয়।
ভূ-পাঠ
রাত্রি এলে সূর্যদেব আলো ফেলে চন্দ্রে
আমাদের ভুল ক্ষমা করো, হে প্রভু
ভূমি তোমার অন্ধকারেই করে পাঠ
সৃজিত হোক, সৃষ্টি হোক অনাগত।
দেহ
মাটির ভাঁড়ার এটা
থাকে সুধা ভরে
পবিত্র বৃক্ষ তুমি
হাওয়াতে মুক্তি।