Logo
×

Follow Us

কবিতা

তাসখন্দে, তলস্তয়ের বন্ধ বাড়ির সামনে

Icon

পিয়াস মজিদ

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫:৪৩

তাসখন্দে, তলস্তয়ের বন্ধ বাড়ির সামনে

প্রতীকী ছবি

‘জানো নাকি? তাসখন্দে এলে
এই বাড়িতে তলস্তয় থাকতেন।’
উজবেক গাইড আবদুল্লাহর কথার রৌদ্র কেড়ে নেয়
সেই ছায়াহরিণী বাড়ি।
বন্ধ দরোজা, উঠোনটা মেপলের পাতায় মোড়া।
যৎসামান্য তলস্তয়-জ্ঞান ঝালিয়ে নিয়ে দেখি
কোথায়, কত পৃষ্ঠায় আছে
বন্ধ দরোজায় ধাক্কা, কত পৃষ্ঠায়
সদর দরজায় তোপ দাগা,
কোথায়বা সেই মায়া-ভিখিরিনী,
‘ওগো ভালমানুষের মেয়ে, একটা রুবল হবে!’
বিকেল ডাকছিল সন্ধ্যাকে,
আসন্ন গোধূলির ভাষায় নিশ্চয়ই
মুসাবিদা হবে; যুদ্ধ ও শান্তির।
সে অপেক্ষায় দূর থেকে দেখি
ছিমছাম বাড়িটায় শতাব্দীর ছায়া-আবছায়া
আন্না কারেনিনার ইতস্তত হাঁটাচলা।
আর ওদিকে আবদুল্লাহ ডাকছে আমাকে।
গাইডের গাড়ি ছাড়ল বলে; দ্বিধাথরথর আমাকে
জোব্বাজাব্বা পড়া এক সন্ত হঠাৎ দরোজা খুলে
কখন যে তাঁর বাড়ির ভেতর নিয়ে গেল!
ক্রমশ আমার দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে গেল-
তাসখন্দ-ঢাকা-দিল্লি-মস্কো-নিউইয়র্কে চলতে থাকা
শয়তানের বিরতিহীন বায়োপিক।
এরপর মরণের মুহূর্মূহু ডঙ্কা বাজল;
সেই রাশান বুড়োর কবলে পড়ে
ভাগ্যাহত বাঙালি আমি, মরতে মরতে
সাড়ে তিন হাত সীমায়িত মাটির সঙ্গে
অভেদ হতে হতে, এই প্রথম বুঝতে লাগলাম-
মানুষ কী নিয়ে বেঁচে থাকে আর বেঁচে থাকতে ঠিক
কতটুকু জমি প্রয়োজন তার!
কখনও আবার আবদুল্লাহর সঙ্গে দেখা হলে বলব,
‘একমাত্র মরতে গিয়েই বুঝতে পারা যায়
বেঁচে থাকতে পড়া তলস্তয়ের মৌল মর্ম।’

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫