
ছবি: নিজার কাবানি
শব্দ দিয়ে আঁকা ছবি
বিশ বছর ধরে হাঁটছি ভালোবাসার পথে
কিন্তু পথের মানচিত্র এখনো রয়ে গেছে অজানা।
কখনো বিজয়ী হয়েছি।
হেরেছি তারও বেশি।
বিশ বছর পরেও, হে ভালোবাসার কিতাব
এখনো প্রথম পাতাতেই আছি আমি।
শব্দ দিয়ে বিশ্ব জয় করি আমি
শব্দ দিয়ে বিশ্ব জয় করি আমি
জয় করি মাতৃভাষা
ক্রিয়া, বিশেষ্য, বাক্যরীতি।
জলের সংগীত আর আগুনের বারতাবহ
নতুন এক ভাষায়
আমি মুছে দেই সব আদি-অনাদি
ভবিষ্যতকে আলোকিত করি আমি
সময়কে স্থির করে দেই তোমার চোখে
এবং মুছে ফেলি
সময় আর এই মুহূর্তের বিভেদ রেখা।
বোকামী
স্মৃতির বই থেকে
তোমাকে যখন মুছে ফেলি আমি
আমি খেয়াল করি না যে আমি মুছে ফেলছি
আমার অর্ধেক জীবন।
ভাষা
একজন প্রেমিক যখন প্রেমে পড়ে
পুরনো শব্দ কিভাবে সে ব্যবহার করবে?
প্রেমপিয়াসি নারী কি কখনো
ব্যাকরণ আর ভাষাবিদের
সঙ্গ যাচবে?
আমার ভালোবাসার নারীকে
কিছুই বলিনি আমি
শুধু একটা সুটকেসে
ভালোবাসার বিশেষণগুলি ভরতি করে
সব ভাষা থেকে পালিয়ে গেছি আমি।
কাপ এবং গোলাপ
ভালোবাসা ভুলতে আর
আমার দু:খগুলোকে কবর দিতে
আমি কফি হাউজে এলাম, কিন্তু
তুমি উঠে এলে আমার
কফির কাপের তলা থেকে,
একটা শাদা গোলাপ।
সমীকরণ
আমি তোমাকে ভালোবাসি
সুতরাং আমি এখন
বর্তমান কালে আছি।
আমি লিখি, প্রিয়া,
আমি অতীতকে তুলে ধরি।
মুষ্টিবদ্ধ দেশ থেকে একটা অতি গোপন রিপোর্ট
বন্ধুগণ!
কবিতা কী যদি তা বিদ্রোহ ঘোষণা না করে?
যদি তা স্বৈরশাসককে উৎখাত না করে?
কবিতা কী যদি তা আমাদের প্রয়োজন যেখানে
সেখানে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ না ঘটায়?
কবিতা তাহলে কী যদি তা বিশ্বের শক্তিশালী রাজাদের মাথায় শোভিত
মুকুট উড়িয়ে না দেয়?
বিংশ শতাব্দীতে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কজন লেখক আরবি সংস্কৃতিকে বদলে দেয়ার ব্রতে সাহিত্য চর্চা করার জন্য বিশিষ্ট হয়ে আছেন। দামেস্কে জন্মগ্রহণকারী কবি নিজার কাবানি (১৯২৩-১৯৯৮) তাঁদের অন্যতম। মূলত তাঁর প্রেমের কবিতার জন্য বিখ্যাত হয়েছেন তিনি। আরব বিশ্বের নারীমুক্তির স্বপ্ন দেখতেন তিনি। On Entering the Sea কাব্যগ্রন্থ থেকে এখানে সাতটি কবিতা অনুদিত।