বিগত পাঁচ বছরে রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৩৬৪ জন। আর আহত হয়েছেন ২৯ হাজার ৫৪৮ জন। সহিংসতার সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে ২০২১ সালে। ওই বছর ৯৩২টি ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫৭ জন। আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৮৩৩ জন। ২০২২ সালে ৪৭৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭০ জন। আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৯১৪ জন। 

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

জানা গেছে, ২০২২ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে ৭৬টি। এতে নিহত হয়েছেন একজন ও আহত হয়েছেন ১ হাজার ৪৮১ জন। বিএনপির সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে ২২টি। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২ জন। আহত হয়েছেন ৩১৬ জন। ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে ১০টি। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭৪ জন। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সিপিবি, এলডিপি ও গণ-অধিকারের পৃথকভাবে ১২টি ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ৯৫ জন আহত হন।

গত বছর আওয়ামী লীগের নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৮৮টি। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১২ জন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ১৪৪ জন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুবলীগের ঘটনা ঘটেছে ১টি। আহত হয়েছেন ৩ জন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছাত্রলীগের ঘটনা ঘটেছে ১টি। নিহত হয়েছেন ১ জন। আহত হয়েছেন ৩ জন। যুবলীগের সঙ্গে ছাত্রলীগের ঘটনা ঘটেছে ৫টি। সহিংসতায় আহত হয়েছেন ৫৩ জন। যুবলীগের নিজ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৪টি। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১ জন।

আহত হয়েছেন ৩১ জন। ছাত্রলীগের নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে ১১টি। এতে ১ জন নিহত ও ১৮৬ জন আহত হয়েছেন।

বিএনপির নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ১১টি সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও ১৮৬ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রদলের নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে ২টি। দুটি ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪০ জন।

দলীয় সহিংসতা ছাড়াও ২০২২ সালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে ৪৩টি। এতে ৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক হাজার ২৩৮ জন। ছাত্রদলের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে ৬টি। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪৭ জন। ওই বছর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংঘর্ষ হয়েছে ১৫৭টি। এসব ঘটনায় নিহত হন ৪৪ জন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৫৭৪ জন।

গত পাঁচ বছরে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২০২১ সালে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যে জানা গেছে, ২০২১ সালে রাজনৈতিক সহিংসতা ঘটেছে ৯৩২টি। এতে ১৫৭ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৮৩৩ জন।

এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৮টি। এসব সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ১০২ জন। বিএনপির সঙ্গে যুবলীগের সংঘর্ষ হয়েছে ২টি, আহত হয়েছেন ১৩ জন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির সংঘর্ষ হয়েছে ১টি। আহত হয়েছেন ৭ জন। হেফাজতে ইসলামীর সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে ১টি। এতে আহত হয়েছেন ৭২ জন। ছাত্রলীগ-বিএনপির ৪টি সংঘর্ষে ৬৫ জন আহত হয়েছেন।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের নিজ দলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে ৭৩টি। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯ জন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৪৪ জন। আওয়ামী লীগ-যুবলীগের ৬টি সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৩১ জন। যুবলীগের নিজ সংগঠনের মধ্যে ৭টি সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৫৭ জন। ছাত্রলীগের সঙ্গে যুবলীগের ৩টি সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের নিজ সংগঠনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে ৫টি। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩ জন। আহত হয়েছেন ১৫ জন। বিএনপির নিজ দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে ৫টি। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮৩ জন। ছাত্রদলের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ হয়েছে ১টি। এতে আহত হয়েছেন ৬ জন। যুবদলের নিজ নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১ জন।

২০২১ সালে সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৬৭২টি সহিংসতার ঘটনায় ১১৩ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন ৭ হাজার ২০১ জন। এ ছাড়াও পৌরসভা নির্বাচনে ৭৭টি সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন নিহত ও আহত হন ৬২৬ জন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৬টি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও আহত হন ১৬২ জন।

২০২১ সালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ১৭টি। এতে আহত হয়েছেন ৬৩২ জন। পুলিশ-ছাত্রদল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ১১টি। এতে আহত হয়েছেন ১৭১ জন।