কিশোরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী কোনও উৎসবে যাননি: কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:৩২

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনও উৎসবে যাননি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এর আগে, আজ বেলা ১১টার দিকে জাতীয়তাবাদী যুবদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পরে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, সরকারের যেহেতু জনগণের প্রতি দায়-দায়িত্ব নেই, সে কারণে তারা এখন উৎসব শুরু করেছে। আপনি যেটা বলেছেন আজকে যে তারা আবদুল হামিদ সাহেবের (রাষ্ট্রপতি) এলাকাতে উৎসব অনুষ্ঠান করছে।
বিএনপির এই নেতা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, তারা তো এটা স্বীকারই করতে চায় না, দেশে একটা অর্থনৈতিক সংকট চলছে। দেশে মূল্যস্ফীতি চরম আকার ধারণ করেছে। দেশের সাধারণ মানুষ আজকে চাল কিনতে পারছে না।
মির্জা ফখরুল অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বিবৃতিতে বলেন, যাদের শাসনামলে হাওয়া ভবন খুলে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে আজ জনগণের ভাগ্যোন্নয়ন দেখে তাদের মনে গাত্রদাহ হচ্ছে। কিশোরগঞ্জে শেখ হাসিনা কোনও উৎসবে যাননি। তিনি নবনির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ ক্যান্টনমেন্ট উদ্বোধনের জন্য গিয়েছেন। শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সশস্ত্র বাহিনী নীতি প্রণয়ন করেছিলেন। সেই আলোকে সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে শেখ হাসিনা ফোর্সেস গোল-২০৩০ নির্মাণ করেছেন। তিনি একে একে রামু ক্যান্টনমেন্ট, বরিশালে শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্ট, মাওয়ায় শেখ রাসেল ক্যান্টনমেন্ট এবং কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে আজ একটি ক্যান্টনমেন্ট উদ্বোধন করলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জীবনমানের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করছেন। সেই ধারাবাহিকতায় বাদ যায়নি এক সময়ে মূল ভূ-খণ্ড থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন অবহেলিত হাওর অঞ্চলও।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ পরপর দুইবার সফলতার সঙ্গে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষ করতে যাচ্ছেন। এ উপলক্ষ্যে সেখানে একটি সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশগ্রহণ করেছেন। এখানে কোনও উৎসবের আয়োজন করা হয়নি। শেখ হাসিনার শাসনামলে হাওর অঞ্চলে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তার মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটেছে। শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে উন্নয়নের ফলে মূল ভূ-খণ্ডের সঙ্গে তার যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্মিত হচ্ছে উড়াল সেতু। এ সকল পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে সুধী সমাবেশের আয়োজন হয়েছিল।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, বিএনপি আমলে ২১৯ দিনের মাথায় তাদের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে তাদের দলের ক্যাডাররা রেললাইনে ধাওয়া করেছিল। যা দেশবাসী ভুলে যায়নি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক শাসক খুনি জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে বন্দুকের মুখে উৎখাত করেছিল। বিএনপি আমলে রাজাকার আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মতো মানুষকে রাষ্ট্রপতি করা হয়েছিল। তাদের আমলে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন জনগণের কাছে ইয়েস উদ্দিন নামে অবহিত হয়েছিলেন। সুতরাং দেখা যায়, বিএনপির সময় যারা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তারা অপদস্থ, অসম্মানিত ও অপমানিত হয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ দেশের ১ কোটি পরিবার আমার ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পাচ্ছে অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে। উপকারভোগীরা ভালো আছেন। এটা বিএনপির সহ্য হচ্ছে না। বিএনপি তাদের আমলে লুটপাট করেছে এবং দেশের কোনও উন্নয়ন করে নাই। তাদের সুনির্দিষ্ট কোনও নীতি-আদর্শ ছিল না। বিএনপির কাছে রাজনীতি ছিল ভোগের বস্তু, দুর্নীতিই ছিল তাদের রাজনীতির একমাত্র নীতি।
তিনি বলেন, আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ফলে দেশের সকল মানুষের কাছে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে যাচ্ছে। জনগণ ভালো আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও আমাদের খাদ্য সংকট নেই। অর্থনৈতিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে রয়েছে। শেখ হাসিনা সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন বলেই বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে। অতএব, বিএনপির নেতৃবৃন্দের এ ধরনের বক্তব্য তাদের হতাশার বহিঃপ্রকাশ।