ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরপর বিস্ফোরণের কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

আজ রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

ফখরুল বলেন, গতকাল সীতাকুণ্ডে এবং আজ ঢাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন যেটা, পরপর ঘটছে কেন? বিস্ফোরণের পেছনে কারণ কী সেটা তদন্ত করে বের করা হচ্ছে না কেন? সরকার যখন ব্যর্থ হয় তখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যারা এগুলো দেখার দায়িত্বে আছেন; যেন দুর্ঘটনা না ঘটে, দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে মানুষের জীবননাশ না হয় সেই ব্যবস্থা নিচ্ছে কি না—সরকারি সংস্থাগুলো সেটা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে, সরকার ব্যর্থ হওয়ার কারণে। সরকারের ব্যর্থতার কারণে এই ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে।

এ সময় বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি শোকপ্রকাশ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন বিএনপির মহাসচিব।

পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক সংকট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, পঞ্চগড়েও গতকাল চরম একটা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন, দোকানপাটসহ বাড়িঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রশ্ন যে, এ ধরনের একটা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সরকার চুপ করে থাকলো কেন, সেখানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো কেন বা পরবর্তীকালে যখন আক্রমণ হয়েছে, তখন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখল কেন, সেটাকে তারা প্রতিহত করতে সক্ষম হলো না কেন? এই যে সাম্প্রদায়িক সমস্যা সৃষ্টি করা, বিভেদ সৃষ্টি করা, এটি সরকার সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি তারা অত্যন্ত অসৎ উদ্দেশ্যে করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ যখন গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেছে, অধিকার আদায়ের জন্য যখন সংগ্রাম শুরু করেছে, দ্রব্যমূল্য যখন জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, মানুষ যখন এ নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে, মিছিল করছে, রাজনৈতিক দলগুলো যখন রাস্তায় নেমে এসেছে, তখন এ ধরনের ডাইভারশন করানোর জন্য, জনমনকে বিভ্রান্ত করার জন্য, অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্য এ ধরনের সাম্প্রদায়িকতা ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন নস্যাৎ করতে চায় সরকার।

তিনি বলেন, এ ঘটনার জন্য আমরা সম্পূর্ণ দায়ী করছি সরকারকে। তাদেরই জবাবদিহি করতে হবে এবং যারা দায়ী, তাদের বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

এর আগে, গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়। তাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও দলের লিয়াজোঁ কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে আরো উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশীদ খান, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, নুরে আলম, শাহজালাল মোল্লা প্রমুখ।