Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

ঈদের পর আন্দোলন বেগবান করতে চায় বিএনপি

Icon

বাছির মোহাম্মদ

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৩৮

ঈদের পর আন্দোলন বেগবান করতে চায় বিএনপি

বিএনপির লোগো। ফাইল ছবি

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনসহ ১০ দফা দাবিতে মিত্র জোট ও দলকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছে বিএনপি। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘যুগপৎ আন্দোলন’।

বিএনপির নেতৃত্বে পরিচালিত এ আন্দোলনের সঙ্গে রয়েছে জেএসডিপ্রধান আসম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্য সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে সাতদলীয় ঐক্যজোট গণতন্ত্র মঞ্চ, ২০ দলীয় জোট বিলুপ্তির পর সেখানকার কয়েকটি দল নিয়ে গঠিত ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি), লেবার পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি। এর সঙ্গে আরও রয়েছে পেশাজীবীদের সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ও সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট। এ পর্যন্ত গণমিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, পদযাত্রা, সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে তারা।

এই রমজান মাসেও ঢাকাসহ দেশের সকল মহানগর, বিভাগীয় সদর. জেলা-উপজেলায় অবস্থান কর্মসূচি করেছে। গত ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে সারা দেশে বিভাগভিত্তিক ইউনিয়ন পর্যায়ে মানববন্ধন, অবস্থান ও প্রচারপত্র বিতরণের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এসব কর্মসূচি দিয়ে বিএনপি ও তার মিত্রদের যে টার্গেট সরকারের পদত্যাগ বা অপসারণ তা কতটুকু বাস্তবায়ন সম্ভব?

এমন প্রশ্নের উত্তরে দলের নেতারা জানান, বিএনপি ও তার মিত্ররা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে আছে। জনগণ এরই মধ্যে সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে।

বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতি দিতে রূপরেখা তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ মুহূর্তে চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে চায় দলের হাইকমান্ড। এক্ষেত্রে তারা দুই ঈদ এবং বর্ষা মৌসুমের কথা মাথায় রেখে আন্দোলনের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে জুন-জুলাই থেকে কর্মসূচির ধরনে পরিবর্তন আসতে পারে। বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের বৈঠকে আলোচনা করেছে বিএনপি।

আন্দোলনের রূপরেখার ব্যাপারে জানতে চাইলে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা সৈয়দ মহাম্মদ ইবরাহিম জানান, ঈদের পর আন্দোলন আরও বেগবান হবে। ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘আপনারা জানেন, একটা গণ-আন্দোলন একইভাবে সমগতিতে সমধারায় চলতে পারে না। তার আপস অ্যান্ড ডাউনস (উত্থান-পতন), তীব্রতা এবং বিভিন্ন পশ্চাৎপদতা থাকে, সেই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি।’

রমজানের কারণে আন্দোলনের ধরন কিছুটা পরিবর্তন হলেও কর্মসূচি অব্যাহত আছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরা যার যার অবস্থান থেকে কর্মসূচি পালন করছে। এ অবস্থায় আগামী দিনে আমাদের করণীয় নিয়ে ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বসেছি।’

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিভাগীয় গণসমাবেশে সরকারি প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে আন্দোলনের যে টেম্পো তৈরি হয়েছিল, ঈদের পরে আন্দোলনকে আবার সে জায়গায় নিতে চায় বিএনপি। তবে দলটির নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি, ‘নির্বাচনকালীন সরকার গঠন’ এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিলের দিকে। বিএনপি মনে করছে, নভেম্বর নাগাদ এই দুটি কাজ সম্পন্ন হবে। দাবি আদায়ে তার আগেই ‘অলআউট’ আন্দোলনে যাবে দলটি, যেটি হবে স্বল্পকালীন। সে লক্ষ্যে হাইকমান্ডের নির্দেশে বিএনপি নেতারা এখন সারা দেশে ইফতার মাহফিলের মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের সংগঠিত ও আন্দোলনের জন্য সংগঠনকে প্রস্তুত করছেন।

সর্বাত্মক আন্দোলন সামনে রেখে এরই মধ্যে দলের কাঠামোর বাইরে গিয়ে বর্তমান ও সাবেক প্রায় তিন হাজার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি মতবিনিময় করেছেন। এই জনপ্রতিনিধিদের তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করতে বলেছেন। এখন বিভাগ এবং জেলা পর্যায়ে দল, অঙ্গ ও সংগঠনের ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত ও সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া সিনিয়র নেতারাও 

তৃণমূলের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য, আগামীতে সর্বাত্মক এবং সর্বব্যাপী আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।

ঈদের পরে কী ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে, জানতে চাইলে বিএনপির নেতারা বলেন, ‘এ নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা এরই মধ্যে গণমিছিল, মিছিল, অবস্থান, সমাবেশ, পদযাত্রা, মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করেছি। এখন নতুন ধরনের আন্দোলন ভাবা হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মিত্রদের নিয়ে বিএনপি আন্দোলনে আছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আশার কথা হচ্ছে-এবারের আন্দোলনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ক্রমেই বাড়ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আন্দোলন চলছে, ক্রমেই তা বেগবান হবে। তবে কোন পর্যায়ে গিয়ে সেটা চূড়ান্ত রূপ লাভ করবে, তা আন্দোলনের পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫