Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

আজমত উল্লাই আমার সব ক্ষতির মূল পরিকল্পনাকারী: জাহাঙ্গীর

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৩, ২৩:৪৬

আজমত উল্লাই আমার সব ক্ষতির মূল পরিকল্পনাকারী: জাহাঙ্গীর

নিজ বাসবভনে সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের এক দিন পর মুখ খুলেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। আজ মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে নিজ বাসবভনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।

এসময় তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোয়নবঞ্চিত হওয়া এবং বহিষ্কারের জন্য নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লাকে দায়ী করেছেন।  

সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ৬ বছর সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ২০১৮ সালে এখান থেকে আমাকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। নৌকা প্রতীক নিয়ে আমি নির্বাচন করেছিলাম। একজন মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগসহ নগরের সব মানুষের জন্য কাজ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আমি এ শিক্ষাই পেয়েছি। আমি মেয়র হওয়ার পর দলমত নির্বিশেষে সবার জন্য কাজ করেছি। কিন্তু মাত্র ৩ বছর দায়িত্ব পালন করার পর আমাকে মেয়রের পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পেশিশক্তি বলেন, আদালত বলেন- সব জায়গায় শক্তি প্রয়োগ করে আমাকে আর সিটি করপোরেশনে বসতে দিল না। নীতি এবং আদর্শের জায়গা থেকে আমি ৫ বছরের জন্য শপথ নিয়েছি। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আমি আদালত পর্যন্ত গিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত থেকেও আমি ন্যায়বিচার পাইনি। কালক্ষেপণ করে করে সময় পার করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীর বলেন, দীর্ঘ ১৮ মাস আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সব নেতৃবৃন্দের বাসায় গিয়েছি, অফিসে গিয়েছি, সবাইকে বিষয়টি বলেছি, যোগাযোগ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি বলুন, না হয় সত্য বলার জন্য আমাকে একটি সুযোগ করে দিন। সব নেতৃবৃন্দরাই বলেছেন, তুমি কোনো অন্যায় করোনি, তোমার সমস্যাটা সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় জানি না প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার বিষয়ে কেউ কিছু বলেছিল কি না!

সাবেক এই মেয়র বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি। সেই হিসেবে আমার একটি জবাবদিহিতা আছে। মেয়র হিসেবে আমি যা কিছু করেছি সব নিয়ম মেনেই করেছি। তারপরও আমার মেয়র পদ স্থগিত বা বাতিল হয়ে গেল। আমার জন্য কথা বলার কোনো পথ তৈরি করে রাখা হয়নি। শুধু আমার বিরুদ্ধে নালিশ গিয়েছে। আমি বলতে চাই, যারা আমার বিরুদ্ধে নালিশ দিয়েছে তারা এই জায়গায় এক কথা বলেছে আর প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরেকটা কথা বা তথ্য দিয়েছে। সেই হিসেবে আমি বলতে চাই, আমি জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ করেছি। আমার মতো একজন কর্মী বা সমর্থককে কেউ যদি এভাবে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ফেলে দেয় তবে, নেতৃত্বে কী আসবে?

তিনি বলেন, আজকে গাজীপুরে এসে দেখেন, লাখ লাখ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি একসঙ্গে হয়ে গাজীপুরে ভোট করতে আসছেন। যেখানে আপনারা যুদ্ধ করতে আনবিক বোমা ব্যবহার করতেছেন এখানে আনবিক বোমার কোনো দরকারই ছিল না। আমি, আমার মা এবং আওয়ামী লীগ যদি একসঙ্গে হয়ে কাজ করতাম তাহলে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দদের গাজীপুরে আসতে হতো না। আমার নেতৃবৃন্দের বাসায় বাসায় যেতে হতো না। প্রশাসনের লোক যারা টেবিল ঘড়ির নির্বাচন করছেন তাদের বাসায় যাচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন, এতে কি আপনারা আপনাদের সন্তানের মুখে বিষ ঢেলে দিচ্ছেন না? আমি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। আপনারা নেত্রীকে সত্যটা জানান, ওনি সত্যটা জানুক, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর হয়রানি করা হচ্ছে, অবিচার করা হচ্ছে।

সাবেক মেয়র বলেন, আমার মা এসব অন্যায়ের প্রতিবাদস্বরূপ এখানে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। সন্তান হিসেবে আমি আমার মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমার মা বলেছেন, তুমি যদি অন্যায় কিছু করো এর বিচার এ শহরের মানুষ আগামী ২৫ তারিখ ভোটের মাধ্যমে করবে। কিন্তু এখানে আজমত উল্লা খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই আজমত উল্লাই হচ্ছেন আমার সব ক্ষতি করার মূল পরিকল্পনাকারী।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গাজীপুর জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায়। এরপর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ওই বছরের ১৯ নভেম্বর দলের কার্যনির্বাহী সংসদ জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার করে। জাহাঙ্গীর আলমকে শর্তসাপেক্ষে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজে ও তার মাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করা হয়। জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা ঋণখেলাপির কারণে বাতিল হলেও তার মায়ের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে জাহাঙ্গীর আলম তার মায়ের টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। দলে ফেরার প্রায় ৫ মাস পর দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মায়ের সঙ্গে প্রচারে নামার অভিযোগে আবারও জাহাঙ্গীর আলমকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫