Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

জাতির সাথে তামাশা করা আওয়ামী লীগের ‘পপুলার সংস্কৃতি’: রিজভী

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৩, ১৫:০৫

জাতির সাথে তামাশা করা আওয়ামী লীগের ‘পপুলার সংস্কৃতি’: রিজভী

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংলাপ নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারি নেতাদের সংলাপ নিয়ে ক্ষীণস্বর কর্পূরের মতো। তাদের সংলাপের কথা মাটিতে পড়ার আগেই হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। সংলাপ নিয়ে আওয়ামী নেতাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে তারা জাতীয় তামাশার মুখপাত্র হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন জনগণের কাছে।

তিনি আরও বলেন,  জাতির সাথে তামাশা করাটাই আওয়ামী লীগের ‘পপুলার সংস্কৃতি’। তারা গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ভয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়টি সবমসময় এড়িয়ে যায়। সুতরাং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা সূর্য পূর্ব থেকে পশ্চিমে ওঠার শামিল।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার নানামুখী গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে নিশিরাতের সরকার। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করে ক্ষমতাকে স্থায়ী করার নীলনকশা করছে সরকার। মূলত, আজ্ঞাবহ ইসি প্রধানমন্ত্রীকে পুনরায় নির্বাচিত করার একটি মেশিন।

রিজভী আরও বলেন, একের পর এক দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে শেখ হাসিনা দেশে নিষ্ঠুর নাৎসি শাসন অব্যাহত রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী আজীবন ক্ষমতায় থাকতে ও দুর্নীতিকে অবাধ রাখার জন্য সংবিধান কাটাছেঁড়া করে- সংশোধনী, কালাকানুন, ইনডেমনিটি-সবকিছু পাশ করে নিয়েছেন বিনা ভোটের অবৈধ সংসদে। গতকাল পুরো ভোট বাতিলের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনী বিল পাস করেছে শেখ হাসিনার ভুয়া ভোটের এমপিরা। নিজের স্বাধীনতাকে বিক্রি করে দিয়ে নির্বাচন কমিশন যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। বর্তমানে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়, এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন ‘ম্যানিপুলেট’করার একটি মেশিন। নির্বাচনি আইন লঙ্ঘনের কারণে চলমান নির্বাচন বাতিলের যে ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ছিল, তা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, আগে মনোনয়নপত্র দাখিলের ন্যূনতম সাত দিন আগে ক্ষুদ্রঋণ এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল পরিশোধের বিধান থাকলেও এখন সরকারের দুর্নীতিবাজ লুটেরা ঋণ খেলাপিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত তা পরিশোধের বিধান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা এবং এর সারবত্তা নিঃশেষ করে দেওয়া হলো। জাতীয় নির্বাচনের মাত্র মাস ছয়েক আগে ইসিকে ক্ষমতাহীন-নখদন্তহীন করার উদ্দেশ্য-সুদূরপ্রসারী। এই সংশোধনীর মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথকে রুদ্ধ করা জন্য এটি শেখ হাসিনার মাস্টারপ্ল্যান। যেখানে দেশি-বিদেশি সকল মহলের পক্ষ থেকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু করার জোর দাবি উঠেছে। সেখানে নির্বাচন কমিশনের বিদ্যমান ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে সরকার আরও জোরালোভাবে একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে গেলো। এতে আবারও প্রমাণেত হলো শেখ হাসিনার অভিধানে সুষ্ঠু নির্বাচন নেই। এই সংশোধনী দূরভিসন্ধিমূলক, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার বেপরোয়া মনোভাব আরও বেশি প্রকট হলো।

বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন হলেও যাতে কিছু করতে না পারে সেজন্য এই রক্ষাকবচ। শুধু কেন্দ্রভিত্তিক ভোট বাতিলের ক্ষমতা রাখলে কেন্দ্রের বাইরে উক্ত নির্বাচনি এলাকায় কোনো ভোটারকে বাধা প্রদান বা ভয় ভীতি প্রদর্শন বা বল প্রয়োগ করলে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার ক্ষমতা থাকল না। তাদের দলীয় ক্যাডার, ছাত্রলীগ থেকে রিক্রুট করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী-প্রশাসন দিয়ে সমস্ত ভোটকেন্দ্রে ভোট ডাকাতি করবে, বলপ্রয়োগ, হাঙ্গামা, ভীতি-প্রদর্শন, চাপ সৃষ্টি করবে। আর নির্বাচন কমিশন দুই-তিনটি কেন্দ্র অনিয়ম হয়েছে নাটক করে ভোট বাতিল করলেও আওয়ামী লীগের জয় নিশ্চিত। এটাই আওয়ামী লীগের নতুন ফর্মূলা।

সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশে সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশ বাহিনী কর্তৃক হামলা ও মামলার বিবরণী তুলে ধরা হয়। এছাড়াও সরকারদলীয় নেতাদের বিভিন্ন হুমকি ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ভিডিও প্রদর্শনী করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত দেড় মাসে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২২৫টি হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছে ৮৬৫ জন এবং আসামি করা হয়েছে ১০ হাজার ১০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, খান রবিউল ইসলাম প্রমুখ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫