আন্দোলন দমন করতে সরকার ইন্টারনেট শাটডাউন বা ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। দলটির এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার কোনোভাবেই দেশে ইন্টারনেটসেবা নিয়ন্ত্রণ করে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করি না। বরং (ইন্টারনেটের) সহজলভ্যতার সুযোগ নিয়ে পেইড এজেন্ডা দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বিএনপি। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারদলীয় নেতাদের চরিত্র হনন করছে তারা। তাদের পেইড এজেন্টদের দিয়ে দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে এসব করছে। তারা যে পেইড এজেন্ট নিয়োগ করেছে তা প্রমাণিত। তাদের অডিও ক্লিপও ফাঁস হয়েছে।’

আজ সোমবার (২৪ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বিভিন্ন দেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে, মন্ত্রী ও সরকারি দলের নেতাদের চরিত্র হনন করে, তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেন তারেক রহমান (বিদেশে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান)। সেই বৈঠকের ছবিও আমাদের কাছে আছে। এটা কেবল ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার কারণে করতে পারছে, যা কখনও সমীচীন না। এগুলো ডিজিটাল অপরাধ।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালে (জাতীয় নির্বাচনের আগে) আমাদের স্লোগানই ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্যতম লক্ষ্য ছিল সবার কাছে ইন্টারনেট সহজলভ্য করা। গ্রামে-গ্রামে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেওয়া। গ্রামে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে লাখ-লাখ টাকা ইনকাম করে এমন অনেক যুবক আছে।’

তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলকে (বিএনপি মহাসচিব) অনুরোধ জানাব পেছনে ফিরে তাকানোর জন্য। উনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন ৫০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন। এখন বাংলাদেশে ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। গ্রামের গৃহবধূ, স্কুলের শিক্ষার্থী, রিকশাচালকসহ কৃষকরাও ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এই ইন্টারনেটকে সর্বজনীন করেছে বর্তমান সরকার।’

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডিজিটাল অপরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য কাল (রবিবার) সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উচিৎ সরকারকে ধন্যবাদ জানানো। তিনি ভিডিও কনফারেন্সে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মিটিং করেন। সেটা শেখ হাসিনার জন্য হয়েছে। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানানো দরকার।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। ২০১৮ সালের মতো নয়, বরং পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশ নিক।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ কেউ নষ্ট করছে কি না, সেটা এখন দেখার বিষয়। কেউ যদি নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়, সেটি নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার শামিল। নির্বাচন যে কেউ বর্জন করতে পারে, কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার অধিকার কারও নেই।’