
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত | ছবি: সংগৃহীত
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৬৬টি আসন পেতে পারে বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এছাড়া নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে বিএনপির এককভাবে সরকার গঠনের কোনো সম্ভাবনা নেই। দলটি সর্বোচ্চ ১৩৭টি আসন পেতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত। ‘ভোটারের মন বুঝে’ ও আগের চারটি ‘অপেক্ষাকৃত ভালো’ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণের মাধ্যমে করা গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে জানান এ অর্থনীতিবিদ।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৫ আসনের ফলাফল মোটামুটি নির্ধারিত। এগুলো দলগুলোর জন্য ‘সম্ভাব্য বিজয় নিশ্চিত’ আসন। এর মধ্যে ৭০ আসন পাবে আওয়ামী লীগ ও ৭০ আসন পাবে বিএনপি। বাকি ১৫টি আসন পাবে অন্যান্য দল। তবে এই আসন দিয়ে সরকার গঠন নিরূপণ হবে না। অন্য ১৪৫টি সংসদীয় আসনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হবে।
এছাড়া নির্বাচনে মোট ১১ কোটি ৯০ লাখ ভোটারের ৭০ শতাংশ ভোটারই দলের অনুগত ভোটার। তাদের মধ্যে ৩০ শতাংশ আওয়ামী লীগের, ৩০ শতাংশ বিএনপির আর ১০ শতাংশ অন্যান্য দলের। আর এর বাইরের ৩০ শতাংশ ভোটার দলীয় অনুগত নন। এই দোদুল্যমান ৩০ শতাংশ ভোটার কাকে ভোট দেবেন, তা পূর্বনির্ধারিত নয় বলে গবেষণার ফলাফলে উল্লেখ করা হয়।
আগামীতে আওয়ামী লীগের পক্ষে সরকার গঠনের সম্ভাবনা বেশি দাবি করে গবেষণার তথ্য বলছে, ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৪৮ থেকে ১৬৬টি, বিএনপি ১১৯ থেকে ১৩৭টি এবং অন্যান্য দল ১৫টির মতো আসন পেতে পারে। সম্ভাব্য ফলাফলের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের পক্ষে সরকার গঠনের সম্ভাবনা বেশি। বিএনপির পক্ষে এককভাবে সরকার গঠনের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিএনপির জোটবদ্ধ সরকার গঠনের সম্ভাবনা থাকলেও তা অনেক বেশি শর্তসাপেক্ষ।
যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ পদ্ধতির মাধ্যমে সম্ভাব্য ফলাফলে উপনীত হয়েছে দাবি করে অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত বলেন, আসন্ন নির্বাচনে কোন দলের অবস্থা কেমন হতে পারে, তা জাতীয় কৌতূহলের বিষয়। গত কয়েকটি নির্বাচনের তথ্য ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় নির্বাচনী কারসাজি, প্রহসন, জোরজবরদস্তি, টাকাপয়সার খেল-এসব স্থান পায়নি।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে দীর্ঘ খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরো গবেষণা একটি প্রধান অনুসিদ্ধান্ত মেনে করা হয়েছে। সেটি হলো- আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক। যেখানে সব দল, প্রার্থী ও ভোটারের জন্য নির্বাচনী মাঠ হবে সমান-সমতল।
গবেষণার উদ্দেশ্য সম্পর্কে আবুল বারকাত বলেন, এই গবেষণা কেউ করাননি। শতভাগ ব্যক্তিগত উদ্যোগ। ছয় মাস আগে মনে হচ্ছিল, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক কিছু হবে। আমি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি, অর্থনৈতিক সমিতির গবেষণার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু গবেষণা ফলাফল তুলে ধরার আয়োজন করেছে অর্থনীতি সমিতি।