
শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুসহ জোটের নেতারা। ছবি- ফোকাস বাংলা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল জোটগতভাবে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে ১৪ দলীয় জোটের নেত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা জোটনেতাদের বলেছেন, এর জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত রাখতে হবে। সবাই দাঁড়ান, যিনি জিতে আসতে পারেন।
গতকাল সোমবার (৫ ডিসেম্বর) গণভবনে অনুষ্ঠিত ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে। এতে সূচনা বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা, পরে বৈঠকে উপস্থিত নেতারা বক্তব্য দেন।
সভায় জোটনেত্রী উন্মুক্ত নির্বাচন চাইলেও শরিকেরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চান। এ জন্য আসন ছাড় চান তারা। জোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক এবং মুখপাত্র আমির হোসন আমুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আলাদাভাবে জোটের দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গেছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর জোটের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারিসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেন।
আসন ছাড় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে এক নেতা বলেন, নেত্রীর বক্তব্যে মনে হয়েছে আওয়ামী লীগের কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না। এর মধ্যে কোন কৌশল অবলম্বন করে জোটের নেতাদের বিজয়ী করানো হবে, সেটা ঠিক করা হবে। তবে মনে হয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে ছাড় দেওয়া হবে। অন্যদিকে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর আসনে প্রার্থী রাখেনি। মঞ্জু ছাড়া তিনজন নৌকায় ভোট করবেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনিও নৌকায় নির্বাচন করবেন। বাকি আসনগুলোতে আওয়ামী লীগসহ অন্যদের প্রার্থী থাকবে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, শেখ হাসিনা তাদের বলেছেন, নির্বাচন উৎসবমুখর করতে প্রতিটি আসনই উন্মুক্ত রাখতে চান তিনি। তবে জোটের অন্য নেতারা আসন সমন্বয় ও জোটগতভাবে নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নেন। বর্তমান সংসদে থাকা জোটের চার দলের চার নেতার নির্বাচনী আসনে সমঝোতা করার অনুরোধ জানান জোটনেতারা।
বৈঠকে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৫ বছরেও দল ঠিক করতে পারেননি। দলকে শক্তিশালী করেন। নতুন নতুন কত দল আসছে। এ সময় জোটনেতারা বলেন, অন্য কোনো দলের সঙ্গে মেলালে হবে না। জোটের দলগুলোর একটা আদর্শিক পরিচিতি আছে।
হাসানুল হক ইনু বলেন, শরিকেরা আপনার সঙ্গে এত দিন ধরে আছে। আন্দোলন, লড়াই-সংগ্রাম করলাম একসঙ্গে। বর্তমান অবস্থায় আমরা তো আর কিছুই করতে পারব না।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে রাশেদ খান মেনন বলেন, আমরা জোটগতভাবে নির্বাচনে যাচ্ছি-এই বিষয়টা চূড়ান্ত হয়েছে। আর আসনের বিষয়টি আমির হোসেন আমু ভাই আর ওবায়দুল কাদের বসে ঠিক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, এটা সবাই মেনেই বৈঠক শেষ করেছি।
সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বলেন, আমরা জোটগতভাবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করব। আসনের বিষয়টা নিয়ে আমু ভাই কথা বলে ঠিক করবেন।