
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা অভ্যূত্থানে শেখ হাসিনার সরকারে পতন হয়। ছবি: সংগৃহীত
আজ বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারে অন্য কারা থাকছেন, সে ব্যাপারে সঠিকভাবে কিছু জানা যাচ্ছে না। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে কারা হচ্ছেন ১৫ সদস্যের অন্তর্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টা তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা আর বিশ্লেষণ।
জানা গেছে, অনেক নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাদের দুজন প্রতিনিধি রাখতে চাইছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও একজন বা দুজনের নাম দিতে চান। তবে রাষ্ট্রপতি কেন তার পছন্দের লোক দেবেন, এ নিয়ে বিভিন্ন দলের প্রশ্ন রয়েছে।
এছাড়া আরও জানা গেছে, ড. ইউনূসের পক্ষ থেকেও তাদের ৩১ সদস্যের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে। দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে আলোচনা করে বাকি উপদেষ্টাদের নাম চূড়ান্ত করা হবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাবনার জন্য। সূত্রের দাবি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আকার হবে ১৫ থেকে ২০ সদস্যের।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ তালিকায় যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তারা হলেন- ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আলী ইমাম মজুমদার, ড. শাহ্দীন মালিক, ড. তাসনিম সিদ্দিকী, মো. তৌহিদ হোসেন, শহীদুল্লাহ খান বাদল, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রমুখ।
এর বাইরে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আরও একজন মুক্তিযোদ্ধাসহ দু’জনকে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। আর একজন সংখ্যালঘু ও একজন আদিবাসী যুক্ত হতে পারেন।
তবে সমন্বয়কদের সূত্রে জানা যায়, ড. ইউনূসের পক্ষ থেকেও তাদের ৩১ সদস্যের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে আলোচনা করে বাকি উপদেষ্টাদের নাম চূড়ান্ত করা হবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাবনার জন্য।
এদিকে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি লিয়াজোঁ কমিটি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র মাহফুজ আলম গতকাল রাতে বলেন, সমন্বিত রূপরেখা আজ ঘোষণা করা হতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে। কারা কারা থাকতে পারেন, কতজন থাকতে পারেন-এসব নিয়ে আলোচনা চলছে৷ কোন রূপরেখা ও কাজের ভিত্তিতে দপ্তর ভাগ হবে, কী হবে না হবে, সেটি আজ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসার পর তার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
লিয়াজোঁ কমিটির আরেক সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র নাসীর আবদুল্লাহ বলেন, লিয়াজোঁ কমিটির পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে বিভিন্ন নাম দিয়েছেন। সব পক্ষের সঙ্গে কথা চলছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো কেমন দেখতে চায়, কীভাবে চায়, কীভাবে হলে ভালো হয়, রাজনৈতিক শূন্যতা থেকে উত্তরণ কীভাবে ঘটানো যায়-এসব বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সবাই শিক্ষার্থীদের ওপর আস্থা রেখেছে।
অনেক নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাঁদের দুজন প্রতিনিধি রাখতে চাইছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও একজন বা দুজনের নাম দিতে চান। তবে রাষ্ট্রপতি কেন তাঁর পছন্দের লোক দেবেন, এ নিয়ে বিভিন্ন দলের প্রশ্ন রয়েছে।
বিভিন্ন দলের নেতারা অভিযোগ করছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্য সদস্যদের মনোনীত করার আগে রাষ্ট্রপতি তাদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আলোচনার ব্যাপারে গতকাল পর্যন্ত তাদের কিছু জানানো হয়নি। বিএনপি নেতারা বলছেন, আলোচনার জন্য তাদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার পরিচালনার জন্য তার নিজেরও কিছু পছন্দ থাকতে পারে। আজ দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে আলোচনা করেই সরকারের অন্য সদস্যদের তালিকা চূড়ান্ত হবে।