
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লোগো। ফাইল ছবি
রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা ও যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন নিয়ে পরিবর্তিত সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ‘সংশয়’ ও ‘সন্দেহ’ তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। এতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে কতটা সময় পরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
জানা গেছে, বিএনপির ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো নেতাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে বর্তমান সরকার সব বিষয় স্পষ্ট না করায় সন্দেহের নানা ডালপালা রাজনৈতিক মহলে বিস্তার লাভ করেছে। যদিও বিএনপির ও জোটের শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা বলছেন, সরকারকে আপাতত ‘সময় দেওয়া’ উচিত এবং এটি সর্বোচ্চ এক বছর হতে পারে। তাও নির্ভর করবে সরকারের কার্যক্রমের ওপর।
তাদের মতে, দেশে বিভিন্ন পর্যায়ে সংস্কার প্রয়োজন। রাষ্ট্রের কাঠামোতে গুণগত পরিবর্তন না এলে পরবর্তী সরকারকে চাপে থাকতে হবে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সংস্কারের পক্ষে মত তাদের। তবে এক বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের গাফিলতি দেখলে সোচ্চার হবে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো। চাপ তৈরি করতে বক্তব্য-বিবৃতি এমনকি নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে কর্মসূচিও দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপি ও সমমনাদের।
বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক বলেছেন, মূলত এই সংশয় ও সন্দেহের কারণ দুটি। একটি হচ্ছে এক-এগারোর সময়ের মতো এই সরকার ক্ষমতায় থেকে যেতে পারে এবং নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে পারে। সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে এই সরকার কাজ করলেও সেটি জাতির সামনে পুরোপুরি খোলাসা করেনি। সন্দেহ বা সংশয় জোরালো হয়েছে, সরকার ও সংশ্লিষ্টদের কিছু বক্তব্য এবং এক-এগারোর সময়কার কেউ কেউ বর্তমান সরকারে দায়িত্ব পাওয়ায়।
বলা হচ্ছে, নাগরিক কমিটির ব্যানারে অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালিত হচ্ছে। এদের কেউ কেউ এক-এগারোর সময় মাইনাস-২ ফর্মুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কেউ কেউ প্রশাসনের ছত্রছায়ার দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন, যা দৃষ্টিকটু। দ্বিতীয়ত, সরকারের মেয়াদ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ না থাকা, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য ছয় মাস বা কয়েক বছরও লাগতে পারে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কারও কারও এমন বক্তব্য সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষমতা প্রলম্বিত হওয়ার লক্ষণ মনে হচ্ছে।