Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি ইস্যু সমাধান হবে: গোলাম পরওয়ার

Icon

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫১

ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি ইস্যু সমাধান হবে: গোলাম পরওয়ার

বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, গণঅভ্যুত্থান কোনো সংবিধান মেনে হয়নি। উপদেষ্টা পরিষদ সংবিধান মেনে হয়নি। তাই রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে সংবিধানের অজুহাত তুলে রাষ্ট্রের সংকট রাখা উচিত নয়।

গতকাল শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে নগরীর ভাটারখাল এলাকায় কেন্দ্রীয় হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহে বরিশাল মহানগর জামায়াতে ইসলামি আয়োজিত সিরাতুন্নবি মাহফিলে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা উপদেষ্টা পরিষদকে বলবো, ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটা ন্যাশনাল কনসেন্স তৈরি করে আমরা যেমন সরকার গঠন করেছি তেমনি জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতির ইস্যুটাকেও আমরা সমাধান করতে চাই।

দলগুলোতে ঐক্যের প্রশ্নে তিনি বলেন, জামায়াতের আমিরের উদার আন্তরিকতায় সকল ইসলামী দল, মত ব্যক্তিত্ব, শায়েখ, ওলামায়ে কেরামদের সাথে মতবিনিময় করেছি, বৈঠক করেছি। বিভিন্ন সময় দফায় দফায় তাদের সাথে বসেছি, আলাপ আলোচনা করেছি। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এই আলোচনায় ইসলামীক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রবল ইচ্ছা আমরা লক্ষ্য করছি।

সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, মুসলিম উম্মা ও জাতির কন্টেস্টে যেসব পয়েন্টে ঐক্য হওয়া সম্ভব সে ইস্যুগুলোকে সামনে নিয়ে ঐক্যের একটা ফরমুলা আমরা তৈরি করছি। সব দল এ ব্যাপারে আন্তরিকতা ও আগ্রহ দেখাচ্ছে। আশা করি নতুন কোনো ষড়যন্ত্র না হলে, আর এই আন্তরিকতা থাকলে ইসলামিক দলগুলোর দূরত্ব কমবে না। একটা ঐক্যের পরিবেশ তৈরি হবে। যাতে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি ইস্যু সমাধান হবে।

গোলাম পরওয়ার বলেন, যেই দলগুলো মিলে আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, একটা ইস্যু নিয়ে সেই দলের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হোক জামায়াত ইসলামী তা কামনা করে না। একটু সময় লাগলেও জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে আগস্টের বিপ্লবের মূল চেতনাকে ধারণ করে আমাদের এই রাষ্ট্রপতির ইস্যুটাকেও সমাধান করতে হবে। এ ব্যাপারে জামায়াত সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছে।

এর আগে বরিশাল মহানগর জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মু. বাবরের সভাপতিত্বে সিরতুন্নবি মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুয়ায্যম হোসাইন হেলাল।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও বরিশাল জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল জব্বার, ভোলা জেলার সাবেক আমির মুফতি ফজলুল করিম, সরকারি ফজলুল হক কলেজে সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাওলানা আব্দুর রব, বাঘিয়া আল আমিন কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, মজলিসুল মুফাসিরিনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা কামরুল ইসলাম খান, মুহাম্মাদপুর বিআর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হায়দার নিজামী, বিহারীপুর সিনিয়র মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদুনন্নবী, নগরীর পাওয়ার হাউস জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আব্দুল গফফার, কলেজ রো জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা কাওসার হামিদী।

মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমান ও মহানগর তারবিয়াত সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা আতিকুল্লাহর যৌথ সঞ্চালনায় মাহফিল ও ইসলামীক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাস্টার মিজানুর রহমান, মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা জয়নুল আবেদিন, মাওলানা শহিদুল ইসলাম, আবু আব্দুল্লাহ, তারিকুল ইসলাম, মাওলানা শফিউল্লাহ তালুকদার, অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান আমিন, মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক আনোয়ার হোসাইন, অধ্যাপক সুলতানুল আরেফিন, মুজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের শহিদ প্রমুখ।

মাহফিল শুরুর আগে আয়োজন ছিল বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এতে ইসলামীক সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশবরেণ্য শিল্পী রোকনুজ্জামান। এছাড়াও বরিশাল সাংস্কৃতিক সংসদ ও হেরাররশ্মি শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনায় প্রাণবন্ত ইসলামীক সঙ্গীত পরিবেশিত হয়, যা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।

এদিকে দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পর বরিশালে জামায়াতের সিরাতুন্নবি মাহফিল ঘিরে নগরীর ভাটারখাল এলাকায় কেন্দ্রীয় মেহায়েত উদ্দিন ঈদগাহজুড়ে দলের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের ঢল নামে। বিকেল ৪টায় মাহফিলের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

এর আগে থেকেই মহানগর জামায়াতের ৩০টি ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ভাটারখাল এলাকায় কেন্দ্রীয় ঈদগাহে জড়ো হতে শুরু করে। এছাড়া বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায় থেকেও শত শত নেতাকর্মীরা এসে মাহফিলে যোগ দেন। ফলে সন্ধ্যার আগেই মাহফিল প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে রূপ নেয়।

আওয়ামী শাসনামলে রাজনৈতিক এবং সামাজিকভাবে কোণঠাসা থাকা নেতাকর্মীরা দীর্ঘ বছর পর একসঙ্গে একত্রিত হতে পেরে ব্যাপক উৎসহ-উদ্দীপনার কোনই কমতি ছিল না জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের মাঝে। মাহফিল থেকে ভবিষ্যতে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বক্তারা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫