
গৌতম দাস। ছবি: সংগৃহীত
‘বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো ঠিক হয়নি’ জানিয়ে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ নিয়ে রাজনীতি অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন বিএনপির এই নেতা।
গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে রুহুল কবির রিজভী নিজের ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
রিজভী বলেন, আমি মনে করেছিলাম, বঙ্গভবনের দরবার কক্ষে যেখানে সব রাষ্ট্রপতির ছবি থাকে সেখান থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে। মূলত ছবিটি সরানো হয়েছিল বঙ্গভবনের অন্য একটি অফিস কক্ষ থেকে।
রিজভী ভুল স্বীকার করে বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে শেখ মুজিবের ছবি রাখার বাধ্যতামূলক আইন করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী আইনের কোনো কার্যকারিতা থাকতে পারে না। অফিস-আদালত সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত।
রিজভীর সংশোধনী বিবৃতির বিষয়ে কথা বলেন রাজনীতি বিশ্লেষক ও কলামিস্ট গৌতম দাস। তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে ছোট একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। সাম্প্রতিক দেশকালের পাঠকদের জন্য গৌতম দাসের লেখাটি প্রকাশ করা হলো।
গৌতম দাস লিখেছেন:
অল্পের উপর দিয়ে গেছে; একটু ইজ্জত গেছে কেবল এই আর কী!
আর দেরি করলে এর সবটাই যেতো; এ এক বিরাট শিক্ষা!
কিন্তু বিএনপি বা তারেক রহমান কী একে শিক্ষা হিসেবে নেবেন? এটিই বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন!
যদি শিক্ষা না নেন তবে এটিই হবে তাদের দলের জন্য আত্মহত্যা বা জাপানি ভাষায় হারিকিরি!!! নিজেই নিজের দলটাকে খুন করে ফেলা!
বিএনপির ছোট-বড়-টপ সব নেতাকে দুইটা কথা বুঝতে হবে।
[এক]
রাজনীতি আর চালাকি এক জিনিস না। তাই রাজনীতি করা শিখেন, বুঝেন ও পড়াশোনা করেন। চালাকি আর রাজনীতি মাখায় ফেলতে যাইয়েন না। দয়া করে!!
হাসিনা যেমন তাঁর চরিত্রের প্রতিহিংসাকেই নিজ রাজনীতি বলে চালাতে গিয়েছিলেন- সেই একই ভুল কইরেন না!
ইতিবাচক হন; নিজ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি রাষ্ট্রের জন্য - গঠন [constitute], সংগঠিত করা; একটা স্থিতিশীল কিছু করতে সব প্রচেষ্টা নিবদ্ধ রাখেন। স্রেফ ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে চালাকির আশ্রয় নিয়ে কিংবা আওয়ামী ভোটার (আওয়ামী দল বা অঙ্গসংগঠন এর ভোট না) দের ১৫-২০% ভোট পেয়ে যাওয়ার লোভে হাসিনার ফ্যাসিজমের দায় নিজের কাঁধে নিতে যাবেন না। ভারতীয়দের পকেটে একটা হাত ঢুকিয়ে রাখা বুদ্ধিমান হতে যাবেন না। সেটি এখন থেকে বাংলাদেশের যে কোনো দলের জন্য হয়ে গেছে এক আত্মঘাতি দায়- এই কথাটা মনে রাখবেন দয়া করে!!!
[দুই]
সবসময় মনে রাখবেন; আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ডমিনেটিং যে আইডিয়া বা ‘রুলিং আইডিয়া’ হয়ে বিরাজ করবে সেটি হলো, ভারতীয় আধিপত্যবিরোধিতা বা এন্টি ইন্ডিয়ান-হেজিমনি। ফলে যারাই বা যে দলই এটি আপহোল্ড করবে না- নিজের রাজনৈতিক বৈশিষ্ট বলে আঁকড়ে ধরতে দ্বিধা দেখাবে তারা এমন সকলেই ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়বেই! জুলাই-আগস্ট এর আন্দোলন এভাবেই নিজেই নিজের মৌলিক পরিচয়-বৈশিষ্ট্যে হাজির হতে যাচ্ছে।
কাজেই বেইমানি করবেন তো একেবারে কাটা পড়ে যাবেন! এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের নিজের...
আরও পড়ুন
বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানো উচিত হয়নি: রিজভী
দুঃখপ্রকাশ করলেন রিজভী