চা বাগানের ‘মদের পাট্টা’ ভাঙার পরামর্শ সারজিসের

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৩৫

সারজিস আলম। ছবি: সংগৃহীত
চা বাগানের বৈষম্য নিয়ে কথা বলার আগে শ্রমিকদের ‘মদ খাওয়ার জায়গা’ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
তিনি বলেছেন, ‘চা বাগানের বৈষম্য নিয়ে আগামীর বাংলাদেশে কথা বলতে চাইলে আগে বাগানের মদের পাট্টা ভাঙুন। মাথা যদি ঠিক থাকে, তাহলে কেউ মাথা কিনতে পারবে না। এমন একটা চক্রান্ত করা হয়েছে, যেন আমাদের মাথাই ঠিক না থাকে।’
আজ রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কুরমা চা বাগানে জাতীয় নাগরিক কমিটির আয়োজিত চা শ্রমিক সমাবেশে সারজিস এসব কথা বলেন। ন্যাশনাল টি কোম্পানিসহ (এনটিসি) বন্ধ সকল চা বাগান অবিলম্বে চালু করা, শ্রমিক ও চা শিল্প রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করা, ন্যায্য মজুরি, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও চাকরি নিশ্চিতের দাবিতে চা শ্রমিকরা সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালীর সভাপতি ধনা বাউরি।
চা শ্রমিক সমাবেশে আপন ব্যানার্জি রুদ্রর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম দাশ, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক শ্যামলী সুলতানা জ্যানি, আসাদুল্লাহ গালিব ও কুরমা চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক ইউসুফ খাঁন প্রমুখ।
সারজিস বলেন, ‘শেখ হাসিনা বৈষম্যমূলক চুক্তিগুলো ভারতের সাথে করেছিল। এই খুনি হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র অল্প কিছু মানুষকে লাভবান করেছে। শেখ পরিবারের কিছু লোক ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডায় হাজার হাজার বাড়ি করেছে, শত শত গাড়ি করেছে। এই শেখ ও শেখের বেটিরাই যদি সব লুটেপুটে খায় আমার চা শ্রমিকরা কী খাবে?’
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৬ বছর ধরে উন্নয়নের গল্প বলতে বলেতে মনে হচ্ছিল যে আমরা বাংলাদেশে নাই, মঙ্গল গ্রহে বসবাস করি। এই উন্নয়ন কোথায়? শেখ হাসিনার চোখ কি ঢাকার গোপালগঞ্জ থেকে এই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আসেনি? টুঙ্গিপাড়া থেকে কমলগঞ্জের চা শ্রমিকদের পাড়ায় তার চোখ কি পড়েনি।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম দাশ বলেন, ‘চা শ্রমিক জনগোষ্ঠী যুগ যুগ ধরে বৈষম্যের শিকার। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় অবাধ লুটপাট চা শিল্প ও শ্রমিককে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। চা শ্রমিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, চাকরি নিশ্চিয়তাসহ চা শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়ন করতে হবে।’
এছাড়া অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চা শ্রমিক কন্যা সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান খাইরুন আক্তার, স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, পঞ্চায়েত সভাপতি নারদ পাশী, চা শ্রমিক নারী নেত্রী গিতা কানু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাজমিন সুলতানা।