আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী’ সংগঠনগুলোকে নিয়ে যুগপৎ কর্মসূচির উদ্যোগ নিচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

রবিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সাথে সংলাপ শেষে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

নাহিদ বলেন, “কোনোভাবেই বাংলাদেশে আমরা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রবেশের সুযোগ দেব না। এ বিষয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এনসিপি আহ্বায়ক আরও বলেন, “মাঠের কর্মসূচির প্রয়োজন হলে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে যৌথ বা যুগপৎ কর্মসূচি দেওয়ার উদ্যোগ নেব। কোনোভাবেই বাংলাদেশে আমরা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রবেশের সুযোগ দেব না। এ বিষয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

টানা সাড়ে ১৫ বছর শাসন করার পর ক্ষমতাচ্যুতিতে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা গত এক মাসে তৎপর হওয়ার চেষ্টা করছে। গত এক সপ্তাহে ঢাকায় বেশ কয়েকটি মিছিল তারা করেছে। চলতি সপ্তাহের দুই দিনের রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় দলটির নেতাকর্মীরা মিছিল করছে। বিভিন্ জায়ড়া থেকে বেশ কিছু কর্মী-সমর্থককে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ ‘ঠেকাতে’ পুলিশ সক্রিয় না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে ‘বিভেদ’ দৃশ্যমান। কেন্দ্রের কথার লড়াইয়ের পাশাপাশি বিভেদ ছড়িয়েছে র্তণমূলেও। নানা বিষয়ে বিপরীত অবস্থানে রয়েছে দীর্ঘ সময়ের মিত্র বিএনপি-জামায়েতও। জুলাই অভ্যুত্থানে পক্ষের শক্তিদের মধ্যে এ অনৈক্যের কারণ জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, “যারা বর্তমানে রাজনীতি করছে তাদের নানা মত থাকবে। বাংলাদেশে এখন একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ রয়েছে, ফলে যে যার মত প্রকাশ করতে পারছে। এটি কেবলই ভিন্নমত।”

“রাজনৈতিক দলগুলো মধ্যে এমন কোনো অনৈক্য তৈরি হয়নি। যার সুযোগ ফ্যাসিবাদী শক্তি নিতে পারে। ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আমরা সবসময় ঐক্যবদ্ধ আছি।”

আওয়ামী লীগের বিচার দাবি জুলাই অভ্যুত্থানের এই নেতা বলেন, “ব্যক্তিদের বিচার অবশ্যই হবে। আমরা মনে করি, দলগতভাবেও বিচার হওয়া উচিত। জুলাই গণহত্যা একটি রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞ। এটিতে দলগতভাবে আওয়ামীলীগ নেতৃত্ব দিয়েছে এবং অংশগ্রহণ করেছে।”

বারবার ঘোষণা দিয়েও জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে না পারা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, “আমাদের আজকে আলোচনার একমত হওয়া বিষয়গুলোর প্রথমেই ছিল জুলাই শহীদদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি। জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি উদ্দেশ্যই ছিল, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য একটি লিখিত দলিল তৈরি করা। যাতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তিগুলো ঐক্যমত থাকবে। আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টার পরেও যেকোনো কারণে তা হয়নি।”

“আমাদের সাথে সরকারের আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়নি। হলে, আমরা অবশ্যই সেখানে বলব। পাশাপাশি এখন আমরা জুলাই সনদকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এখানে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখার কথা থাকবে। এটি যেন কোনোভাবে ব্যর্থ না হয়। এ বিষয়ে সবাই একমত হলে আমরা জুলাই ঘোষণাপত্রের কথাটিও বলব।”

নির্বাচন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত একটি সময় ফ্রেম আছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে বিচার নিশ্চত ও রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কারের জন্য ঐক্যমতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।