সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ চার বছর করার প্রস্তাবে জামায়াতের ‘না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:১৩

সংবিধান ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংশোধন নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের এক ফাঁকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি জামায়াত প্রতিনিধি দল।
জাতীয় সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ চার বছর করতে সংবিধান সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে তাতে সায় নেই জামায়াতে ইসলামীর। দলটি সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ এখনকার মতো পাঁচ বছরই চায়। তবে সংসদ উচ্চকক্ষ তৈরির প্রস্তাবে তাদের দ্বিমত নেই।
শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের’ সঙ্গে বৈঠক থেকে বের হয়ে জামায়াতের এই অবস্থানের কথা বলেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
সকাল সাড়ে ১০টায় কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে জামায়াতের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
তাহেরের নেতৃত্বে জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, কার্যনিবার্হী সদস্য ইফুল আলম খান মিলন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আজাদ, প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, সহকারী সেক্রেটারি এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
কমিশনের পক্ষে ছিলেন এর সহসভাপতি আলী রীয়াজ ও নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
বৈঠকের মধ্যবর্তী অংশ শেষ করে তাহের সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ছিল সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ চার বছর হবে। আমরা এর সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছি। আমরা বলেছি, সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ পাঁচ বছর থাকবে।
“দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাবের সঙ্গে জামায়াত একমত।”
সংবিধান সংশোধনে কোন কোন প্রস্তাবে একমত হয়েছেন- এই প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে চাননি দলের নেতা তাহের। তিনি বলেন, “আমাদের বৈঠক বিকাল ৫টার দিকে শেষ হবে। এরপর আমরা একসঙ্গে সব প্রশ্নের উত্তর দেবো।”
শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের’ সঙ্গে বৈঠকে বসে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল।
সংবাদকর্মীদের সঙ্গে দুপুরে কথা বলে মধ্যাহ্ন ভোজে যান জামায়াত নেতারা। পরে আবার শুরু হয় বৈঠক।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার যেসব বিষয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে তারে মধ্যে একটি সংবিধান বিষয়ে।
সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের সুপারিশ তুলে ধরে। এতে চার বছর মেয়াদি দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং ২১ বছর বয়সে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতার সুযোগ রাখার কথা বলা হয়েছে।
নিম্নকক্ষে সরাসরি ভোটে ৪০০ জন প্রতিনিধি নির্বাচনের সুপারিশ করেছে আলী রীয়াজ কমিশন। যেখানে ৩০০ জন সদস্য সমান সংখ্যক সংসদীয় এলাকা থেকে নির্বাচিত হবেন। আর ১০০টি নির্বাচনি এলাকা থেকে ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসবেন ১০০ নারী সংসদ সদস্য।
নিম্নকক্ষের মোট আসনের ন্যূনতম ১০ শতাংশ আসনে তরুণ-তরুণীদের মধ্য থেকে প্রার্থী মনোনীত করার সুপারিশ রেখেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন।
কমিশন সংসদে একটি উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার পক্ষে, যার নাম হবে সিনেট। এর সদস্য হবে ১০৫ জন। এর মধ্যে ১০০ জন সদস্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রদত্ত মোট ভোটের সংখ্যানুপাতে নির্ধারিত হবেন।
সংবিধান অনুযায়ী বর্তমানে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে হলে কমপক্ষে ২৫ বছর বয়সী হতে হয়, এটি ২১ বছরে নামিয়ে আনার পক্ষে কমিশন।
কমিশনের এসব সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যেখানে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলগুলোর মতামত নিচ্ছে তারা।
জামায়াতের সঙ্গে বৈঠকে বসার আসে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, "সংস্কার কমিশনে দেওয়া প্রস্তাব, সার অংশ ও মূল দিকগুলো নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব। "