
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি- ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
গণ-আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে জনগণই তাকে ‘দেখে নেবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা চিলারং ইউনিয়নের মহাদেবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, “শেখ হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তুমুল গণ-আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনা আবার ‘বীরের বেশে’ ফিরবেন স্লোগান দিয়ে গত এক মাস ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশের এখানে সেখানে মিছিল করছেন।
বিএনপি নেতা বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা আবারও দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না।”
শেখ হাসিনা কেন পালালেন, সেই প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “কারণ, জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন, যে তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন (৫ আগস্ট) তাকে পেত তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ‘শেষবারের মতো’ সুযোগ চান ফখরুল। তিনি বলেন, রাজনীতি করতে করতে বুড়া হয়ে গেলাম। আমার মনে হয় সম্ভবত এটা আমার শেষ নির্বাচন। আর নির্বাচন করার মতন আমার শরীরের সেই অবস্থা নাই, নির্বাচন করতেও পারবো না।
“আপনাদের কাছে আমার একটাই আবেদন থাকবে। আমারে শেষ নির্বাচনে আপনারা আমার একবার সুযোগ দেবেন।”
জনসভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনারা কি আমাদের সঙ্গে আছেন?’, ‘বিএনপির সঙ্গে আছেন?’, ‘সবাই কী করছেন?’, ‘আপনারা কি বিএনপির সঙ্গে আছেন?’, ‘মার্কাটা কী জানেন তো?’ ইত্যাদি নানা প্রশ্ন রাখেন।
আওয়ামী লীগের আমলে এলাকায় রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করা হয়নি দাবি করে ফখরুল বলেন, “কারণ, আপনারা বিএনপি সমর্থন করেন। এমন অনেক এলাকা আছে বিএনপি সমর্থনের কারণে বঞ্চিত করা হয়েছে।
“আপনারা বলেন এমন ব্যক্তিরা কি জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন? আসুন আমরা সবাই মিলে একটা ভালোবাসার দেশ গড়ি।”
নেতাকর্মীদের ‘অন্যায়’ না করার আহ্বানও জানান ফখরুল। বলেন, “যদি করে থাকেন তাহলে আওয়ামী লীগের মতন অবস্থা হবে৷
“কেউ অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে তুলে দেবেন৷ দল আপনাদের, ধানের শীষ আপনাদের, রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের।… কোনো নেতাকর্মী অন্যায় করলে যাতে জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করে অথবা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।”
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর বিএনপি সভাপতি আব্দুল হামিদ,সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন সহ দলটির নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।