Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিল নির্বাচনের উপযুক্ত সময়: জামায়াত আমির

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৫, ১৯:০২

ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিল নির্বাচনের উপযুক্ত সময়: জামায়াত আমির

দুটি সময় নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। এর একটি আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা শুরুর আগে, দ্বিতীয়টি সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না এলে সর্বোচ্চ এপ্রিল মাস।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে জেলা ও মহানগরের আমির সম্মেলনে তিনি এমন সময় উল্লেখ করেন।

জামায়াতের আমির বলেন, "প্রধান উপদেষ্টা এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী ২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার কথা বলেছেন। ফেব্রুয়ারির শেষে এবং মার্চের তিন ভাগের দুই ভাগ সময় জুড়ে রোযা থাকবে, তার পরেই ঈদ। এই সময় কোনো নির্বাচনের সময় নয়। দু’টি সময় আমরা নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত মনে করি। একটি হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাস রোজা শুরুর আগে। আরেকটা হচ্ছে যদি কোনো কারণে এই সময়ের ভেতর সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে তাহলে ম্যাক্সিমাম এপ্রিল পার হওয়া উচিত নয়।”

তিনি বলেন, “অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে হবে। এই সুষ্ঠু এবং বস্তুনিষ্ঠতার স্বার্থে কতিপয় সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। এ বিষয় আমরা আমাদের সুপারিশমালা সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর কাছে পেশ করছি। আমরা সব দলের প্রতি আহ্বান জানাব রাজনীতি নিজের জন্য নয়। রাজনীতি দেশ এবং জনগণের জন্য। আমরা যত বেশি সহযোগিতা করব ততো বেশি জাতি উপকৃত হবে। আগামী নির্বাচন ততটাই সুষ্ঠু এবং সুন্দর হবে।”

অপরাধীদের বিচার চাই

জামায়াতের আমির বলেন, “আমরা বলেছি যে, অবশ্যই যারা অপরাধী তাদের বিচারটা দৃশ্যমান হোক জাতি এটি দেখতে চায়। এ স্বল্প সময় সব বিচার করা সম্ভব নয় এটি আমরাও বুঝি। কিছু বিচার তো করতে হবে। যাতে জাতির মনে আস্থা তৈরি হয়। যারা প্রধান অপরাধী তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে দৃশ্যমান বিচার জাতির সামনে অবশ্যই উপস্থাপন করতে হবে। আমরা সরকারের একটা দুর্বলতা লক্ষ্য করি, বিচারের ক্ষেত্রে আমরা আরও গতি চাই। সরকার বেশি তৎপর হয়ে এই কাজটা করবে, এটি আমরা দেখতে চাই। যদি এদের বিচার হয় তাহলে আগামী নির্বাচনেও কালো টাকা এবং পেশি শক্তির প্রভাব খাটাতে পারবে না। আর এ রকমের দুঃসাহস হয়ত কেউ দেখাবে না।”

“কিন্তু বিচার যদি না হয় এর আশঙ্কা তো থেকেই যাবে। আমরা এই নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য এবং জনমতের শতভাগ প্রতিফলন ঘটানোর জন্য আমাদের দেশের পার্লামেন্টকে কোয়ালিটিসম্পন্ন পার্লামেন্ট দেখতে চাই। এজন্য নির্বাচনকে পেশিশক্তি এবং কালো টাকার প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে।”

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির পক্ষে জামায়াত

এ সময় সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির পক্ষে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে দলটির আমির বলেন, “আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থায় নির্বাচন হতে হবে। বিশ্বের ৬২টি দেশ এটি অনুসরণ করে। বেশির ভাগ দেশ হচ্ছে উন্নত দেশ বলে যারা পরিচিত তারা সুফল পেয়েছে। এটি যারা একবার শুরু করেছে তারা আর বাদ দেয়নি। আমরা ট্র্যাডিশনাল নির্বাচন পদ্ধতি দেখেছি। যারা লেখা দেখে পড়তে পারে না তারাও সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছে। তারা কী আইন রচনা করে বাংলাদেশের মানুষকে দেবেন? তারা কোন আইটি সংস্কারসাধন করার যোগ্যতা রাখেন?”

“এজন্য আমরা বলেছি যে, আনুপাতিক হারে সেখানে যাবে। যে যত পার্সেন্ট ভোট পাবে সে তত আসন পাবে। এতে করে কোন দলকে ছোট এবং বড় বলার কারও সাহস হবে না। দল ছোট হউক বড় হউক দল দলই এবং কোন দল কারো দয়ার পাত্র হবে না। তার নিজের দল নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।”

আওয়ামী লীগ আমলে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, খুন, লুণ্ঠন ও অপহরণ হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, “সাড়ে ১৫ বছর ধরে যারা হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, খুন, লুণ্ঠন ও অপহরণ করেছেন, জনগণের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছেন তাদেরও আমরা ন্যায্য বিচার দাবি করি। তারা যেন কোনোভাবেই কোন ফাঁকফোকরে পার পেতে না পারে। আইনের আওতায় এনে তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ দাবি আমরা করে আসছি এবং এ দাবি আমরা করতেই থাকব। এ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের দাবি থাকবে।”

নারী কমিশনের সুপারিশ বিবেচনা করার প্রশ্নই আসে না

নারী সংস্কার কমিশনের করা প্রতিবেদনেও সমালোচনা করেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, “অতি সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিটি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর সুপারিশমালা সাবমিট করেছে। আমরা বিস্মিত, আমাদের বিদ্যমান কালচার তমদ্দুন এর সম্পূর্ণ বিপক্ষে। তারা কিছু সুপারিশমালায় এনেছেন এগুলো বিবেচনা করার প্রশ্নই আসে না। শুধু তাই নয় তাদের কিছু কিছু সুপারিশ আল্লাহর বিধানের বিপক্ষে দাঁড় করিয়ে পেশ করা হয়েছে। তাদের এই সুপারিশ গ্রহণ করলে কুরআন পরিবর্তন হয়ে যাবে। অথচ আল্লাহ তায়ালা কুরআন নাযিল করে বলেছেন, কুরআন নাযিল করেছি আমি, রক্ষাও করব আমি। এখানে একটি হরফ, নুকতাও কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না।”





Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫