ফিরছেন খালেদা জিয়া, নিরাপত্তার চাদরে শাহজালাল বিমানবন্দর

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫, ১০:৫২

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আগমন ঘিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা।
চার মাস চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার আগমন ঘিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিমানবন্দর এলাকায় সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, সিভিল অ্যাভিয়েশন, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন।
ভিআইপি গেট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। বিএনপির সিনিয়র নেতারা ওই গেট দিয়েই বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করছেন।
বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সব সংস্থার সদস্যরা সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। অপ্রীতিকর কিছু যাতে না ঘটে, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক।”
সকালের দিকে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে জড়ো হতে থাকেন বিমানবন্দরের আশপাশে।
তারা কেউ পিকআপে, কেউ বাসে, দলীয় পতাকা মাথায় বেঁধে, গান বাজিয়ে দলীয় উচ্ছ্বাসে অংশ নিচ্ছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
তবে গাড়িবহরের সঙ্গে কোনো মোটরসাইকেল বা নেতাকর্মীদের পায়ে হেঁটে চলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন।
বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিতে বলা হয়েছে দলীয় কর্মীদের।
দেশে ফিরছেন জুবাইদা রহমানও
বিমানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরছেন তার বড় ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান।
২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেশ ছাড়ার পর ১৭ বছর পর এবারই প্রথম বাংলাদেশে ফিরছেন জুবাইদা রহমান।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি তার জন্য একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করেন। ওই বিশেষ বিমানেই ৮ জানুয়ারি তিনি লন্ডনে গিয়েছিলেন। সেই একই বিমানেই মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, “ম্যাডাম সময়মতোই পৌঁছাবেন বলে আমরা আশা করছি। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে দলের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন।”
প্রস্তুত ‘ফিরোজা’
গুলশানের ৮০ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি—‘ফিরোজা’তে খালেদা জিয়ার জন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
বাড়ির সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ ও সিএসএফ সদস্যরা পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছেন। বাড়ির ভেতরের সব কক্ষ পরিষ্কার করা হয়েছে, বাগানেও টব দিয়ে ফুলের গাছ সাজানো হয়েছে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, “বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সব ঠিক আছে। বাসা পুরোপুরি প্রস্তুত। স্বজনরাই সব তদারকি করেছেন। এখন আমরা সবাই ম্যাডামের অপেক্ষায় আছি ।”
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে ঢাকার এয়ারপোর্ট থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন খালেদা জিয়া। পরদিন বিকেল ২টা ৫৮ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছায় কাতার রাজপরিবারের ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। এরপর তাকে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ১৭ দিনের ক্লিনিক-পর্ব শেষে তাকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।