-6820841707ed3.jpg)
আওয়ামী লীগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড়ে জুলাই আন্দোলনে আহত এবং নিহত পরিবারের সদস্যরা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেননি জুলাই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী একদল মানুষ।
ক্ষমতাচ্যুত দলটিকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা, ‘জুলাই সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন এবং ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার দাবিতে রোববার আবারও শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনে আহতরা ও নিহতদের পরিবারের শ দুয়েক সদস্য।
দুপুর থেকে তারা শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
গত বছরের জুলাইয়ে বরিশালে আন্দোলনের সময় আহত হওয়া মোহাম্মদ সাকিব বলেন, “সরকার আমাদের সাথে প্রহসন করেছে। আমরা ‘খুনি’ আওয়ামী লীগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ চাই।
“আওয়ামী লীগের কার্যক্রমকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করলে হবে না, তাদের স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “এছাড়া জুলাই আন্দোলনে সদন দিতে কেন এক মাস লাগবে?”
গত বুধবার রাতে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশত্যাগ করলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। পরদিন রাতেই এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর আহ্বানে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে জমায়েত হয়।
এরপর দুই দিনের আন্দোলনে যুক্ত হয় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোও। শুক্রবার শাহবাগে এসে অবস্থান নেয় তারা, আর শনিবার যমুনামুখী লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে বসে সরকার। এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য ট্রাইব্যুনালে রাজনৈতিক দলের বিচার সম্ভব করতে প্রয়োজনীয় আইনি সংশোধন আনার কথাও জানানো হয়।
জুলাই আন্দোলনের পক্ষ থেকে যে ‘সনদ’ ঘোষণার দাবি কয়েক মাস ধরে এনসিপি নেতারা জানিয়ে আসছেন, সেটিও আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
এই ঘোষণার পর এনসিপি ও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীরা ভোরে শাহবাগ ছেড়ে চলে যান।
তবে এর কিছুক্ষণ পরেই শাহবাগে উপস্থিত হন আন্দোলনে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। তারা সরকারের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
উত্তরা থেকে আসা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমি উত্তরায় আহত হয়েছিলাম। আজ পর্যন্ত ভালোভাবে চলতে পারছি না। সরকার আমাদের স্বাস্থ্য কার্ড দিলেও সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছি না।
“স্বাস্থ্য কার্ডের মাধ্যমে কী কী চিকিৎসা পাব, তা সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে। স্বাস্থ্য কার্ড নিয়ে কী করব যদি আমরা চিকিৎসাই না পাই?”
নেত্রকোণা থেকে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক মামুনুর রশীদ বলেন, “আমরা দীর্ঘ দিন ‘জুলাই সনদের’ জন্য আন্দোলন করছি। সরকার আমাদের বিভিন্ন সময় আশ্বাস দিলেও তা গত নয় মাসে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
“কেন সম্ভব হলো না এত দিনেও, তার জবাব এই সরকারকে দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “শহিদ পরিবার ও আহতদের কথা চিন্তা করে সরকারের এই তিনটি দাবি দ্রুত মেনে নেওয়া উচিত।”