বিয়ের আগের রাতে যুবদল নেতাকে আটক, ‘ষড়যন্ত্র’ বলছে পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১১:৩৯
-68242c8875837.jpeg)
জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে হাসানের পরিবার। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
বিয়ের একদিন আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যুবদল নেতা হাসান রহমানকে ‘তুলে নিয়েছে’ বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে হাসানের পরিবারের সদস্যরা তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
সম্মেলনে হাসানের বাগদত্তা অর্পণ রহমান বলেন, “বিয়ের আগের রাতে এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে, তা কল্পনাও করিনি। এটি শুধু আমার জীবনের নয়, আমাদের পরিবার ও সমাজের জন্যও একটি গভীর আঘাত।”
তিনি বলেন, “হাসানের বিরুদ্ধে বানোয়াট তিনটি মামলা দেওয়া হয়েছে। একজন নারী হিসেবে এই পরিস্থিতিতে আমাকে কীভাবে জীবন এগিয়ে নিতে হচ্ছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আমি সরকারের কাছে সঠিক তদন্ত ও সুবিচার দাবি করছি।”
মোহাম্মদপুরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব হাসানকে গত ৭ মে রাতে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
হাসান রহমানকে আটকের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও, তার বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে চাঁদা চেয়ে গুলি চালানোর অভিযোগে করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ২৭ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের শের-শাহ-শুরি রোডে এক আবাসন ব্যবসায়ীর বাসায় গুলি চালায় হেলমেট পরিহিত কয়েকজন। গোয়েন্দা তথ্য ও শারীরিক গঠন বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সন্দেহভাজনদের তালিকায় হাসানের নাম উঠে আসে।
৮ মে মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকা থেকে তাকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ আটক করা হয় এবং পরে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। এ সময় তার বাসা থেকে এক লাখ ১৩ হাজার টাকা, মাদক বিক্রির সামগ্রী ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
পরিবারের দাবি: রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র
সংবাদ সম্মেলনে হাসানের বোন জামাই মেহেদী আহসান গুড্ডু বলেন, “৭ মে রাত ১২টার দিকে প্রশাসন তাকে তুলে নেয় এবং ভোরে আমাদের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ৬৩ হাজার টাকা ও রান্নার কাজে ব্যবহৃত একটি দাঁ ও চাঁপাতি জব্দ করে।”
তিনি বলেন, “হাসান দীর্ঘদিন ধরে যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি ‘জুলাই আন্দোলনে’ গুলিবিদ্ধ হন। তার বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অপরাধের প্রমাণ নেই। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রেই তাকে ফাঁসানো হচ্ছে।”
হাসানের বড় ভাই শামিম রহমান বলেন, “আমার ভাই এলাকায় সুপরিচিত। তার কোনো খারাপ রেকর্ড নেই। আমরা সরকারের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই।”
ঘটনার পরদিন যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তর-এর যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহম্মেদ খান ইকরামের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও গুরুতর অপরাধে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় হাসান মাহমুদকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষে হাসানের বড় বোন বলেন, “আমরা শুধু চাই, সে যদি নির্দোষ হয়, তবে যেন তাকে মুক্তি দিয়ে সম্মানের সঙ্গে সমাজে বাঁচার সুযোগ দেওয়া হয়।”