অর্থ পাচার ও ব্যাংক লুটপাটে জব্দ হওয়া অর্থ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনায় আলাদা তহবিল গঠন করছে সরকার। এই তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক ও আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে, আর একটি অংশ ব্যয় করা হবে দরিদ্রদের কল্যাণে।

সোমবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

তিনি বলেন, “এই সরকারের সময়েই তহবিল গঠন এবং তা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, কারণ এসব অর্থ ইতোমধ্যে সরকারের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এই তহবিলের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।”

গভর্নরের সঙ্গে ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম।

তহবিল ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজন হলে আইন সংশোধনও করা হবে জানিয়ে গভর্নর বলেন, “সবকিছু হবে আইনের যথাযথ ধারা মেনেই। প্রয়োজনে নতুন আইন বা সংশোধন আনা হবে।”

তিনি জানান, এস আলম গ্রুপের ইসলামী ব্যাংকে থাকা ১২ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার শেয়ার জব্দ রয়েছে। এই শেয়ার একটি স্ট্র্যাটেজিক বিনিয়োগকারীর কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এতে করে সেই অর্থ দিয়ে আমানতকারীদের পাওনা পরিশোধ করা যাবে।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, “যেসব অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে, সেগুলো ফিরিয়ে আনতে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করেই এগোতে হবে। এতে চার-পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে। তবে এক বছরের মধ্যেই বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করা সম্ভব হবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, “মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিস্ট্যান্স পাঠিয়ে যেসব দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে, সেসব দেশের সঙ্গে আইনি সহযোগিতার মাধ্যমে টাকা ফেরত আনার বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।”

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবার এবং আরও ১০টি বড় কম্পানির বিরুদ্ধে দেশে ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংযুক্ত (এটাচমেন্টে) রয়েছে। এছাড়া বিদেশে জব্দ রয়েছে আরও ১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং ৪২ হাজার ৬১৪ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ।

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর বিষয়ে গভর্নর বলেন, “ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদ বড় কোনো লেনদেন করতে পারবে না। তবে আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের অপকর্মের তথ্য মুছে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।”