Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

ইসি বিএনপির মুখপাত্রের কাজ করছে: নাসীরুদ্দীন

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১৭:৩৯

ইসি বিএনপির মুখপাত্রের কাজ করছে: নাসীরুদ্দীন

ব্যারিকেড ভেঙে নির্বাচন ভবনের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে ঘোষণা করেছেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ইসি নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বুধবার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেন তিনি।

বর্তমান কমিশনকে পক্ষপাত দুষ্ট অভিযোগ করে নাসীরুদ্দিন বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) যদি পুনর্গঠন না করা হয় তাহলে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে এনসিপি নির্বাচনে অংশ নিবে না।”

ইসি পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সামনে জড়ো হয় এনসিপি নেতা-কর্মীরা। দুই ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করে তারা। এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখা এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।

কর্মসূচি ঘিরে নির্বাচন ভবনের সামনে জড়ো হন এনসিপি নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে নির্বাচন ভবন এলাকায় নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ভবনের ভেতরে কোস্ট গার্ড এবং বাইরে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ভবনের বাইরে ব্যারিকেড দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বেলা সোয়া একটার দিকে ব্যারিকেড ভেঙে নির্বাচন ভবনের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা। এসময় অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

বিএনপির উদ্দেশে নাসীরুদ্দীন বলেন, “আপনারা ৩১ দফা দিয়েছিলেন। আপনারা বলেছিলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন করবেন। কিন্তু আপনারা যখন প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিজের দলের লোক পেয়ে গেলেন তখন আপনারা সংস্কারের কথা ভুলে গেলেন। নির্বাচন কমিশন এখন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বিএনপির মুখপাত্র হিসাবে কাজ করেছে।”

“বিএনপির সালাউদ্দিন সাহেবরা মুজিবাবাদী সংবিধান টিকিয়ে রাখতে চায়। তারা ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশকে ভারতের হাতে তুলে দিতে চায়।”

মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলন এনসিপি অভিযোগ করে, ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা সংক্রান্ত মামলায় উচ্চ আদালতে না গিয়ে ইসি বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে।”

নাসীরুদ্দীন আরও বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ অনুযায়ী গঠিত, যা সে সময় ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষ প্রত্যাখ্যান করেছিল।”

“বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যখন সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল, আমরা সে সময়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিদ্যমান আইনের বিরোধিতা করেছিলাম।”

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, “গত কয়েকটি নির্বাচনে যারা ভোট ডাকাতি করেছে তারা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। আমাদের এনসিপির দাবি, নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে। কারণ আমরা দেখছি নির্বাচন কমিশন একটি নির্দিষ্ট দলের মুখপাত্র হিসাবে কাজ করছে। এ নির্বাচন কমিশন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবি করে নাসীরুদ্দীন আরও বলেন, “আমরা চাই ইসি পুনর্গঠন করে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। গত ১৬ বছর মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল তাদের নির্বাচন কমিশনে রেখে কোনো ভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। যারা স্বৈরাচারের সময় ভোট ডাকতিতে সহযোগিতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।”

তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন বলেন, “বাংলাদেশে শিক্ষাখাত ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য ওয়াহিদউদ্দিন ভাই কাজ করছেন, অর্থনৈতিক খাত ধ্বংসের জন্য সালেহ উদ্দিন ভাই আর আইন মন্ত্রণালয় ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছেন আসিফ নজরুল। আমরা বাধ্য করব এসব উপদেষ্টাকে পদত্যাগে।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এ মাঠে কুসুম কুসুম খেলা চলবে না। এবার কর্মসূচি নিয়ে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করব।”

উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে পাটোয়ারী বলেন, “ঘোষণাপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। একবার ছাত্র-জনতাকে মূলা দেখিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা রাখেননি। এটা বিশ্বাসঘাতকতা। এবার যদি কোনো হেরফের হয়, আসিফ নজরুল বাংলাদেশে থাকবেন কিনা, তা বলা মুশকিল।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণের সঙ্গে অনেক বাটপারি হয়েছে, বেঈমানি হয়েছে। আপনি (আসিফ নজরুল) এই বেঈমানি নিয়ে সরকারি অফিসে আসতে পারেন না।”

শেষে পাটোয়ারী বলেন, “আমরা অপেক্ষায় আছি—ঘোষণাপত্র আসবে, ইসি পুনর্গঠন হবে, স্থানীয় নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচন হবে। এবং আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ পাবো—এই প্রত্যাশায় আজকের বিক্ষোভ শেষ করছি।”

আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ দাবির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছিলাম। সেটা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের তৈরি নির্বাচন কমিশন ও সংবিধান এখনও নিষিদ্ধ হয়নি।”




Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫