Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

‘মার্চ ফর ডক্টর ইউনূস’ ক্যাম্পেইনে এনসিপির ‘সম্পর্ক নেই’: আখতার

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ১৫:১৬

‘মার্চ ফর ডক্টর ইউনূস’ ক্যাম্পেইনে এনসিপির ‘সম্পর্ক নেই’: আখতার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখার দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে একটি প্রচার শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জে এই দাবির পক্ষে মিছিল করেছে একদল মানুষ।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাওয়ার বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে যে প্রচার চালানো হচ্ছে, তার সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানানো হয়েছে।

শনিবার ঢাকার বাংলামোটরে নবগঠিত রাজনৈতিক দলটির সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এই অবস্থান জানান সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

অনেকেই পাঁচ বছর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দেখতে চায়। আপনাদের কী অভিমত’- এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে এই প্রশ্ন ছুড়ে দেন একজন সংবাদকর্মী।

জবাবে আখতার বলেন, “পাঁচ বছরের ক্যাম্পেইনের সাথে দলগতভাবে আমাদের সম্পর্ক নেই।“

তিনি বলেন, “বিচার, সংস্কার ও জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার মাধ্যমে সরকারকে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। এজন্য সরকারকে পাঁচ বছর থাকতে হবে বা ‘কাজবিহীনভাবে’ একটা দীর্ঘ সময় তারা ক্ষমতায় থাকবে এমনা আমরা মনে করি না।”

গত বৃহস্পতিবার মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ‘মার্চ ফর ডক্টর ইউনূস’ নামে একটি প্রচার শুরু হয়েছে।

এই দাবিতে শনিবার বিকালে শাহবাগে সমাবেশের ডাকে একটি ব্যানার ফেসবুকে ছড়িয়েছে, যদিও কারা এই আয়োজনের পেছনে রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

সেই ব্যানারে লেখা আছে, ‘আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন’, ‘দেশের সংস্কারকে বাঁচাতে সবাই এগিয়ে আসুন’।

অন্তর্বর্তী সরকার তার কাজের ভিত্তিতে সময় পাবে বলে মন্তব্য করে আখতার বলেন, “যে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য তারা দায়িত্ব পেয়েছে সেগুলো পূরণ করে তারা নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে।”

সরকারের ‘সৎ ইচ্ছা’ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা থাকলে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে গণঅভ্যুত্থানে প্রাণহানির বিচার, সংস্কার ও ঘোষণাপত্র দিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হতে পারে বলেও মত দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

৬২৬ জনের তালিকা আগেই প্রকাশ হওয়া উচিত ছিল

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান সফল হওয়ার পর সেনানিবাসে আশ্রয় গ্রহণকারী ৬২৬ জনের যে তালিকা সেনাবাহিনী প্রকাশ করেছে, সেই বিষয়েও সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, “আমাদের দীর্ঘদিনের চাওয়া ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা। সেটি সেনাবাহিনী প্রকাশ করেছে। এই তালিকা আরও আগে প্রকাশ করলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনমনে কোনো শঙ্কা বা সন্দেহ তৈরি হতো না। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কথা বলার কোনো সুযোগ পেত না।”

৫ আগস্টের পর সেনানিবাসে ৬২৬ জনের আশ্রয় গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সে সময়ই বক্তব্য রেখেছিলেন।

এ নিয়ে এনসিপির নেতারা বারবার সেনাপ্রধানকে আক্রমণ করে কথা বলেছেন। সেই ৬২৬ জন কারা, তা জানতে চেয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর এই তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকায় বেশি ছিল পুলিশ সদস্য। তাদের সংখ্যাটি ৫১৫ জন।

রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিল ২৪ জন, বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা ছিলেন ১৯ জন, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার ছিলেন ১২ জন, বিচারক ছিলেন ৫ জন এবং ৫১ জন ছিলেন পরিবার-পরিজনসহ (স্ত্রী ও শিশু)।

আশ্রয় গ্রহণকারীদের মধ্যে পাঁচ জনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয় জানিয়ে আইএসপিআর এও জানিয়েছে, এ বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট সরকারকেও একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে।

একে মীমাংসিত বিষয় আখ্যা দিয়ে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, “সে সময় শুধু মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইনবহির্ভূত হত্যা থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের জীবন রক্ষা করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।”

নাহিদ বলেন, “সেনাবাহিনী আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী সময়ে তারা যে ভূমিকা পালন করছে সেটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে কখনও কখনও সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনীতির একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমরা দেখেছি। এটা রাষ্ট্র, গণতন্ত্র, বা সেনাবাহিনী কারও জন্য ভালো ফল নিয়ে আসেনি। এটি যেন আমরা সকলে বিবেচনা করি।”

বিগত সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে এনসিপি নেতা বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগও তাদের (সেনাবাহিনী) বিরুদ্ধে রয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যারা এ রকম কাজের সাথে যুক্ত তাদের শায়েস্তা করবে, এ রকম প্রত্যাশা আমাদের।”

যে-সব সেনা অফিসারের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ রয়েছে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়নি বলে অভিযোগ এনে নাহিদ বলেন, “বা কী অবস্থায় আছে আমরা জানি না। এসব বিষয় সুষ্পষ্টা করলে সেনাবাহিনী আরও আস্থার জায়গা পাবে।”

একসঙ্গে তিন রোডম্যাপ প্রকাশ দাবি

গণঅভ্যুত্থানে প্রাণহানির বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন এই তিনটির রোডম্যাপ একসঙ্গে প্রকাশ করে উচিত বলে মন্তব্য করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, “তিনটির রোডম্যাপ একসাথে প্রকাশ করা হলে জনমনে ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা স্বস্তি তৈরি হবে।”

নাহিদ বলেন, “ঘোষণাপত্রের জন্য যে নির্ধারিত সময় দেওয়া হয়েছে সে সময় আগাচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই সনদ প্রকাশ করা উচিত। জনগণ ও প্রতিটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।”


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫