নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি আন্দোলনে আছে জানিয়ে দলটির এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, তারা কর্মসূচি দিতে শুরু করলে অন্তর্বর্তী সরকার পালাতেও পারবে না।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান এ কথা বলেন।

বিএনপির তিন সহযোগী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগের উদ্যোগে এই সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

মঈন খান বলেছেন, “ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার আমাদের দেশকে ধ্বংস করেছিল। দেশের তরুণ ছাত্রসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। জুলাই আগস্টে আমাদের প্রথম বিজয় হয়েছে। আমাদের আন্দোলন কিন্তু থেমে যায়নি। আমরা বিজয়ের দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছি।”

ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিতে বিএনপির যে দাবি, সেটি আবার তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে গণতন্ত্রে রূপ দিতে হবে, অবিলম্বে দ্রুত নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে।

“জনগণ চায় গণতন্ত্র। আমরা সরকারকে সেজন্য সহযোগিতা করেছি, সহযোগিতা থাকবে। কিন্তু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। না হলে বিক্ষুব্ধ তরুণ সমাজের আন্দোলনে কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার পালাতে পারবে না।”

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপি ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দাবি করেছিল। তবে এরই মধ্যে প্রায় ৩০০ দিন পেরিয়ে গেছে, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখের খোঁজে দলটি।

প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন প্রশ্নে একটি সময়সীমা দিয়েছেন, যাতে বলা আছে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত।

তবে গত শনিবার তার সঙ্গে বৈঠক করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার জন্য লিখিত দাবি তুলে ধরে বিএনপি। তার দুই দিন নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, তাদের এই দাবি পূরণ না হলে সরকারকে আর সহযোগিতা করা হবে না।

তবে বিএনপির এই দাবির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কোনো আশ্বাস দেননি, বরং তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সেই রাতে যে ব্রিফিং করেন, তাতে সরকার প্রধানে আগের অবস্থান ফুটে উঠে।

এর মধ্যে বিএনপির সহযোগী সংগঠনের এই সমাবেশ দৃশ্যত সরকারকে তাদের শক্তি প্রদর্শনের একটি উপায়।

মঈন খান বলেন, “আজকে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ তারুণ্যের সমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আপনার (তারেক রহমান) নেতৃত্বে বাংলাদেশের তরুণরা জেগে উঠেছে “

একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপি ১৫ বছর ধরে জেল জুলুমের শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এটা সরকারকে উপলব্ধি করতে হবে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই, করেছি করব। আওয়ামী লীগের সময় যেমন গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য যুদ্ধ করেছি, তেমনি রাজপথে থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করব।”