লজ্জা লাগল না বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করতে: মির্জা আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ১৫:০৯

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, খুব দুঃখের সঙ্গে এই কথা বলতে হচ্ছে, আজকে ড. ইউনূস সাহেব জাপানে বসে বিএনপির বিরুদ্ধে বদনাম করছেন। তিনি বললেন, একটি দল নির্বাচন চায়। লজ্জা লাগল না বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করতে।
শুক্রবার জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই প্রতিক্রিয়া জানান।
মির্জা আব্বাস বলেন, “আমরা বলতে চাই, একটি লোক নির্বাচন চায় না… সে হলো ড. ইউনুস। তিনি নির্বাচন চান না।”
বৃহস্পতিবার জাপানের টোকিও‘র ইম্পেরিয়াল হোটেলে ৩০তম নিক্কেই ফোরামে ‘ফিউচার অব এশিয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘‘আমরা জনগণকে বলেছি, নির্বাচন এই বছরের শেষে ডিসেম্বরে অথবা সর্বোচ্চ জুনে অনুষ্ঠিত হবে।” তবে কিছু রাজনীতিবিদ নির্বাচনের জন্য জুন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে ডিসেম্বরে নির্বাচন কেন নয়, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। দেশের সব রাজনৈতিক দল নয়, শুধু একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছে।”
‘নির্বাচন ডিসেম্বরেই, জুনে নয়’
মির্জা আব্বাস জোরালো কণ্ঠে বলেন, ‘‘বিএনপি বরাবরই নির্বাচন চেয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে এবং এই ডিসেম্বরের কথা কিন্তু ইউনুস সাহেব স্বয়ং বলেছেন। আমরা বলি নাই….তারই (মুহাম্মদ ইউনূস) এর প্রস্তাব। পরবর্তীতে তিনি শিফট করে চলে গেলেন জুন মাসে।”
‘‘জুন মাসে যদি নির্বাচনের কথা বলেন, এই নির্বাচন কখনও বাংলাদেশে হবে না। সুতরাং নির্বাচন যদি করতে হয় ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে।”
তিনি বলেন, ‘‘আর নির্বাচন যদি করতে না চান সেটি ইউনূস সাহেবের দায়-দায়িত্ব, আমাদের দায়-দায়িত্ব নয়।”
‘‘আমাদের জাতি-জনগণ এই নির্বাচন আদায় করবে …নইলে এদেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ঠিক থাকবে না।”
‘সংস্কার করতে কিছু বিদেশি আমদানি’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করতে হবে জাতিকে বিভিন্ন কারণেই। আপনারা লক্ষ্য করেছেন সংস্কার সংস্কার করতে করতে বর্তমান সরকার বহু লোককে আমদানি করেছেন। আমি আজকে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহু সংস্কার করেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে। কিন্তু বিদেশ থেকে কোনো পরামর্শক আনেননি।”
‘‘আজকে এই সরকার কিছু বিদেশি লোককে আমদানি করেছেন দেশে সংস্কার করার জন্যে। এখন সংস্কার করতে করতে এমন জায়গায় চলে গেছে যে, তারা নির্বাচন দিতে চায় না।”
“জিয়াউর রহমান আধুনিক বাংলাদেশের জনক” হিসেবে অভিহিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘আমরা এই শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে উনার (জিয়াউর রহমান) জন্য দোয়া কামনা করছি… আল্লাহতালা যেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বেহেস্তে নসিব করেন।’’
এর আগে মির্জা আব্বাস দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সালা্হ উদ্দিন আহমদ, এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজার প্রাঙ্গণে আসেন। কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পরে কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন তারা। এরপর প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন।
১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামে এক দল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন জিয়াউর রহমান। বিএনপি এই দিনটি তার ‘শাহাদাৎ দিবস’ হিসেবে পালন করে।