
বাংলামোটরে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মো. নাহিদ ইসলাম।
৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও ইশতেহার পাঠ’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।
রবিবার সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম জানান, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের’ বর্ষপূর্তি ঘিরে মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শিরোনামে এই কর্মসূচি আগামী ১ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত দেশজুড়ে পালিত হবে।
পদযাত্রার বিস্তারিত জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “১ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু হবে। এরপর সারাদেশের ৬৪টি জেলায় এই কর্মসূচি পালিত হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি ও অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত নেতারা একসঙ্গে এই পদযাত্রায় অংশ নেবেন। দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে ঢাকায় এসে পদযাত্রার সমাপ্তি হবে।”
কর্মসূচির অংশ হিসেবে আরও কয়েকটি বিশেষ দিন পালনের ঘোষণা দেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের মৃত্যুর দিনটিকে ‘বৈষম্যবিরোধী শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে সারা দেশে।
তিনি বলেন, “৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও ইশতেহার পাঠ’ কর্মসূচি।
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই জুলাই ঘোষণাপত্র সরকারের দেওয়ার কথা ছিলো। তারা সর্বশেষ ত্রিশ কার্যদিবস সময় আমাদের কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছিল। কিন্তু সরকার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতাদের পক্ষ থেকে এই ঘোষণাপত্রের দাবিটি এসেছিল। জুলাইয়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংবিধানিক স্বীকৃতি, শহীদদের মর্যাদা- এসব কারণেই জুলাই ঘোষণাপত্র প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার শুরুতে বলেছিলো সকলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে এই জুলাই ঘোষণাপত্রটি দেবে। পরে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের সময় সরকার ৩০ কার্যদিবসের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি সরকার রক্ষা করতে পারেনি।”
ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়েই এই কর্মসূচি পালনের কথা উল্লেখ করে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, “এই অভ্যুত্থান করেছে ছাত্র জনতা। সেই ছাত্র জনতাকে নিয়েই আমরা ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্র এবং ইশতেহার পাঠ করার কর্মসূচি রাখছি। ছাত্র জনতার কথা, আকাঙ্ক্ষা শুনে তাদের সাথে নিয়েই আমরা এই কর্মসূচি পালন করবো।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “৫ আগস্ট, যেদিন গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন- সেই দিনটিকে ‘ছাত্র-জনতার মুক্তি দিবস’ হিসেবে পালন করবে এনসিপি।”
৫ আগস্টকে ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে পালনের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার পলায়নের মাধ্যমে পাঁচ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান প্রাথমিক বিজয় অর্জন করেছিলো এবং মুক্তি পেয়েছে। সেই মুক্তি উদযাপনে আমরা মুক্তি দিবস পালন করবো।”
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ এবং মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।