স্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপের অপেক্ষায় আছি: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৪৭

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রুহুল কবীর রিজভী।
বিএনপি নির্বাচনি রোডম্যাপের ‘অপেক্ষা’ করছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য একটি স্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ জরুরি। আমরা নির্বাচনি রোডম্যাপের অপেক্ষা করছি। রাজনৈতিক বিবেচনায় যেসব ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে সেগুলো বাতিল করতে হবে। ফ্যাসিবাদের আমলে যেসব কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল।”
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ চলতি সপ্তাহেই প্রকাশ করার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসির এই ঘোষণা নিয়ে রাজনৈতিকসহ সব মহলেই জোর আলোচনা চলছে।
নির্বাচন আয়োজনের একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে রোডম্যাপ তৈরি করে থাকে ইসি। নির্ধারিত থাকে ভোটের আগে-পরে যাবতীয় প্রস্তুতির বিষয়ে সময়সীমা এবং কর্মপদ্ধতি। সুনির্দিষ্ট করা থাকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, আসন সীমানা পুননির্ধারণ, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, নির্বাচনী আইনের সংস্কার, নির্বাচন সামগ্রী ও সরঞ্জাম কেনাকাটা, রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় মুদ্রণ কার্যক্রম এবং আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা সংক্রান্ত সব পরিকল্পনা।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতির সময় রোডম্যাপ ঘোষণার প্রথা গড়ে ওঠে। সেই ধারাবাহিকতাতেই পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে ইসি ভোট আয়োজনের রূপরেখা প্রকাশ করে আসছে।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি নেতা রিজভী।
তিনি বলেন, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসতে পারে। নইলে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। বিগত সময়ে রাজনৈতিক উদ্দেশে যেসব ভোট কেন্দ্র করা হয়েছে সেগুলো বাতিল করতে হবে। কারণ সেই সময়ে একটা নির্বাচন হয়েছে ভোটার শূন্য, আরেকটা হয়েছে মধ্যরাতের ভোটে, সর্বশেষ ২০২৪ সালে হয়েছে ডামি নির্বাচন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের মনোনয়ন ক্রয় ঠেকাতে আইন বহির্ভূতভাবে ‘মব’ করা হয়েছে। একইভাবে সারাদেশে নানা জায়গায় বেআইনিভাবে মবের আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, “ড. ইউনূসের সরকার ক্ষমতায় থাকতে কেন এই পরিস্থিতি হবে? আজ সারা দেশে আইন বহির্ভূতভাবে মব হচ্ছে। উচ্ছৃঙ্খল জনতা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। কারণ আজ ঠিকমতো আইন প্রয়োগ হচ্ছে না।”
রিজভী বলেন, “আজ বেআইনি কাজ হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। রংপুরে দুজন সংখ্যালঘুর জীবন গেছে মবে। এরকম পরিস্থিতি আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কামনা করতে পারি না।”
বিগত সরকারের আমলের সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ঋণ খেলাপিদের ঋণ নতুন করে নবায়ন করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “আবার এই সরকারের আমলের দেড় লাখ কোটি টাকার ঋণ খেলাপির ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। জনগণ এই সরকারের কাছে এমন পদক্ষেপ আশা করে না।”
ঋণ খেলাপিদের গ্রেপ্তার করে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি বিদেশ প্রচার করা অর্থ ফেরত আনতে না পারলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাবে বলেও মনে করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।