Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

পিআর নিয়ে সিদ্ধান্ত আগামী নির্বাচিত সংসদে: ফখরুল ইসলাম

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:১৬

পিআর নিয়ে সিদ্ধান্ত আগামী নির্বাচিত সংসদে: ফখরুল ইসলাম

রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সোমবার এক মতবিনিময় সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (পিআর) নিয়ে সিদ্ধান্ত আগামী নির্বাচিত সংসদে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে এক মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আজকে যখন পিআরের জন্য আন্দোলন হচ্ছে তখন স্বাভাবিকভাবে আপনারা যারা দেশে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য অতিদ্রুত একটা নির্বাচন চান, গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য, গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট গঠনের জন্য, তারা-আমরা উদ্বিগ্ন হই।

মানুষ ‘পিআর সম্পর্কে কিছুই জানে না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, এই বিষয়টা (পিআর) আগামী পার্লামেন্টের ওপরে ছেড়ে দিতে হবে। আগামী পার্লামেন্টের প্রতিনিধিরা যদি মনে করেন যে, এটা (বিদ্যমান ভোট পদ্ধতি) থেকে পিআরে যাবে… যাবে। জনগণ যদি মনে করে, পিআরে যাবে... যাবে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “পিআর পদ্ধতির সমস্যা হচ্ছে- ব্যক্তির যে স্বাধীনতা থাকে তার নির্বাচিত রিপ্রেজেন্টেটিভ পছন্দ করবার, সেই পছন্দ দলকেই করতে হয়। অর্থাৎ ওই দলকে ভোট দিতে হবে।”

“দল রিপ্রেজেন্টেটিভ নমিনেশনের পরে তাদেরকে পার্লামেন্টে আসার জন্য, এটার সঙ্গে আমাদের দ্বিমত। আমরা জানি যে, যে ব্যক্তিকে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন জনগণ, তারা তাদের পছন্দ মতো ব্যক্তিকে ভোট দেবে সেটা দলের লোকই হবে। এই বিষয়গুলো আমি অবতারণ করলাম এইজন্য, এগুলো আমাদের সামনে আসছে।”

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সদস্যদের সঙ্গে ওই মতবিনিময় সভা হয়। এতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা এবং আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থিতা হিসেবে মনোনয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন।

আগামী নির্বাচনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সর্বাত্মক সহযোগিতা চান এবং তাদের দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন বিএনপি মহাসচিব।

বাংলাদেশের ‘আত্মা’ ঠিক রাখার আহ্বান

মির্জা ফখরুল বলেন, “একটা জিনিস সবসময় মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ সমাজের, রাষ্ট্রের, জাতির আত্মা। এই আত্মা ১৯৭১ সালে আমরা যে অসাম্প্রদায়িক একটা বাংলাদেশ নির্মাণ করার জন্য যুদ্ধ করেছি, আমাদের যে সোল (আত্মা) আছে এই সোলকে নষ্ট হতে দিতে চাই না।”

“আজকে যেকোনভাবেই হোক একটা প্রচেষ্টা আছে যে ভিন্নভাবে চিন্তাভাবনা করার, সেই ভিন্নভাবে চিন্তাভাবনা করার অবকাশ এখানে আছে বলে আমরা মনে করি। আমরা সবাই একটা জাতি এটাকে আলাদা করার সুযোগ নেই।”

আগামী নির্বাচনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সর্বাত্মক সহযোগিতা চান বিএনপি মহাসচিব।

আগামী নির্বাচনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, জন গোমেজ শুধু আপনাদের প্রতিনিধি নন, তিনি আমাদের প্রার্থী। তিনি বিএনপির ভালো জায়গায় ছিলেন এবং আছেন।”

‘আপনারা সংখ্যালঘু নন’

মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনাদের যে দাবি যেটা আপনারা আশায় করেছেন দলীয় মনোনয়নের জন্য নিঃসন্দেহে আপনাদের এই যে পত্রটি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়ে দেব এবং সেটাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখব এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।”

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের দাবি-দাওয়া জোরের সঙ্গে বলতে হবে। আপনারা কখনোই মনে করবেন না যে, আপনারা সংখ্যালঘু।” তিনি আরও বলেন, “আজকে যারা এখানে আছেন আপনারা সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা- সবাই এটা অর্জন করেছেন নিজের গুণাবলী দিয়ে, যোগ্যতা দিয়ে। আপনাদের প্রয়োজনগুলো জোরেই বলতে হবে।”

জুলাই সনদ নিয়ে যা বললেন ফখরুল

তিনি বলেন, “আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এগুলোর ঊর্ধ্বে ওঠে তারা একটা নির্বাচন যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বাংলাদেশের জন্যে, সেই সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। তারা চেষ্টা করছেন, নির্বাচন কমিশন চেষ্টা করছেন। কিন্তু মাঝে মাঝেই আমরা এমন কতগুলো বিষয় দেখতে পাই যে বিষয়গুলো আমাদেরকে খুব উদ্বিগ্ন করে তোলে।”

“রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে পরিবর্তনের জন্য কিছু কিছু জায়গায় সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে, সেই সংস্কার কমিশন তাদের মধ্যে আলোচনা শেষ করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতামত নিয়ে তাদের আলোচনা শেষ হয়েছে। আগামী ১৭ তারিখে আমরা সবাই আশা করছি, যেগুলোতে একমত হয়েছে সেগুলোতে সব দল স্বাক্ষর করবে এবং যেহেতু একমত হতে পারেনি সেগুলো আসন্ন নির্বাচনে সে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তাদের ম্যানিফেস্টো হিসেবে নিয়ে আসবে জনগণের সামনে সেটাকে প্রস্তাব আকারে তারা তুলে ধরবে সেভাবেই তারা চিন্তা করেছেন।”

খ্রিস্টান ল‘ইয়াস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আলবার্ট রোজারিও-এর সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের অনিল লিও কস্তার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বেনেডিক্ট আলো ডি রোজারিও, পিউস কস্তা, রীতা রোজলীন কস্তা, প্রতাপ আগাস্টিন গোমেজ, শংকর প্যাট্রিক কস্তা, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ নেতারা বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সহসম্পাদক জন গোমেজ, রমেশ দত্ত, নির্বাহী কমিটির সদস্য সুশীল বড়ুয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের তরুণ দে, মাইকেল গোমেজ, মৃগেন হাগিদক, মন্টু পিটার রোজারিও, ডিউক পি রোজারিও, ফনিন্দ্রনাথ কর্মকার, বাবুল ডেভিড গোমেজ, টুটুল পিটার রড্রিকস, চন্দন জাকারিয়া গোমেজ, লুইস গোমেজ, শীতল রিবেরু, জজলিন গোমেজ,মার্টিন পেরেরা, স্বপন্ হাওলাদার, পেপিলন পিউরিফিকেশন, প্রশান্ত পিউরিফিকেশন, এরিক ডি কস্তা, পলাশ পিরিচ, আইভি সিং, স্টিভ যোসেফ কস্তা, এলবার্ট রিপন বল্লভ, বার্নাড পলাশ দাস, মিলন আই গোমেজ,ধীরেন দাস, প্রবীর বিশ্বাস, সুমন ডমিনিক গোমেজ, এভারিস রোজারিও, খ্রিষ্টফার দেশাইসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫