
মোহাম্মদ নাসিম
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তার ছেলে তানভীর শাকিল জয় এ কথা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আব্বা আর নেই।’
আজ শনিবার (১৩ জুন) ১১টার দিকে রাজধানীর শ্যামলী বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী আল ইমরান চৌধুরী মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে বলেন, ১১টা ১০ মিনিটে আমরা তার মৃত্যুর ঘোষণা দিয়েছি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
এর আগে শুক্রবার (১২ জুন) রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও তার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড রাতে মিটিং করেছে। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় নতুন করে হার্টে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আগে এই সমস্যা ছিল না।
নাসিম গত জ্বর ও কাশির মতো উপসর্গ নিয়ে গত ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরীক্ষায় নাসিমের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় গত ৫ জুন সকালে তার স্ট্রোক হলে সেখানেই তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়।
অস্ত্রোপচারের পর নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা নাসিমের শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে গেলে ১৩ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এরপর তাকে নেয়া হয় লাইফ সাপোর্টে।
হাসপাতালে টানা আট দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। এরপর দুই দফা তার করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ এলেও লাইফ সাপোর্ট সরানো সম্ভব হয়নি।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর ছেলে নাসিম সংসদে পঞ্চমবারের মতো সিরাজগঞ্জের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন।
আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। পরের বছর মার্চে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তাকে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নাসিম এক সাথে দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৯ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত। পরে মন্ত্রিসভায় রদবদলে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলেও সেবার মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি নাসিমের। তবে পরের মেয়াদে ২০১৪ সালে তাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেন শেখ হাসিনা।
এবার মন্ত্রিত্ব না পেলেও দলের সভাপতিমণ্ডলীতে থাকার পাশাপাশি ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন নাসিম।