অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট মিডিয়ায় প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি।

আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সংসদ ভবনের মূল ফটকের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির এমপি হারুনুর রশিদ এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশে যে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা এবং তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার পরিবার আদালতে যে মামলা দায়ের করেছে সেটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে। এই ক্ষেত্রে সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। এই তদন্ত কমিটি গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি রিপোর্ট দাখিল করে। আপনাদের সংবাদ মাধ্যমে যে তথ্যগুলো পেয়েছি সেটি আমাদের খুব উদ্বিগ্ন করেছে। কারণ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির ক্ষেত্রে যে তথ্য আমরা পেয়েছি, আমরা আশা করবো এর পূর্ণাঙ্গ তথ্যটি মিডিয়ায় প্রকাশিত হোক।

মিডিয়ায় সিনহা হত্যার রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তদন্ত কমিটি কি কাজ করেছে জনগণ বুঝতে পারবে মন্তব্য করে বিএনপির এই সাংসদ বলেন, এই বিষয়টি আমাদেরও জানা দরকার সিনহা কেনো হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন? এর উদ্দেশ্য কি ছিলো? কেনো তাকে হত্যা করা হয়েছে? এই কারণগুলো নিশ্চয়ই আমরা এই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানতে পারবো। তারপরে আমরা এই বিষয়ে আমাদের মন্তব্য করতে পারবো। 

হারুন বলেন, আমি মনে করি এই হত্যকাণ্ড গোটা রাষ্ট্রের ভিত্তিকে নাড়া দিয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আজকে যেভাবে মহিরুহ আকার ধারণ করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে এ দেশের নাগরিকদের উপর্যুপুরি হত্যা করা হচ্ছে। এরপর বিভিন্ন গল্প বানানো হচ্ছে এসব বিষয় নিয়ে সত্যিই আমরা উদ্বিগ্ন। এখানে সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন  মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জাতিসংঘ যে সনদ তৈরি করেছে সেখানে বাংলাদেশ ওই আইনে এখনো স্বাক্ষর করেনি। তাহলে কি আমি ধরে নিবো যে সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রলম্বিত করতে চায়। আমরা এসকল ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে, জাতিসংঘের যে আইন বা সনদটি রয়েছে বাংলাদেশ অবশ্যই এই আইনে স্বাক্ষর করবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলনে, সিনহা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যেহেতু ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছে এবং সেটা তদন্ত হচ্ছে। সুতরাং এরপরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের উচ্চ তদন্ত কমিটি দিয়ে বিচারকে প্রভাবিত করবে কিনা। কারণ আজ হোক, কাল হোক এটাতো প্রকাশিত হবে। যখন তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হবে এবং এজহারে চার্জশিট যখন দাখিল করা হবে তখন তদন্ত কমিটির রিপোর্টের সঙ্গে চার্জশিটের কোন সংঘর্ষ তৈরি হয় কিনা, বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এটা কোন বাধা সৃষ্টি করবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। ওসি প্রদীপের ফোনালাপ নাকি তদন্ত কমিটি পায়নি। কিন্তু আমরাতো গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এগুলো শুনেছি। তাহলে এগুলো কি সত্য নয়? আমরা এখনো আশাবাদি যে এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িতর তাদের প্রকৃত অর্থে বিচার হবে।

এ সময় বিএনপির সাংসদ মোশাররফ হোসেন এবং আমিনুল ইসলাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।