Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

অনুতপ্ত শওকত মাহমুদ শোকজের জবাবে যা লিখলেন

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১৬:৪৩

অনুতপ্ত শওকত মাহমুদ শোকজের জবাবে যা লিখলেন

দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) পাওয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ শোকজের জবাব দিয়েছেন। দলের অপর ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জবাব দেননি। তিনি শনিবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন।

এর আগে সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে তাদেরকে শোকজ করা হয়। দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নোটিশে সই করেছেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের স্বাক্ষরে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কার্মকাণ্ডের অভিযোগ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিনকে ৫ দিন ও শওকত মাহমুদকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।

সাংগঠনিক বিষয়ে দলীয় শৃঙ্খলা না মানার কারণে হাফিজ উদ্দিন ও শওকত মাহমুদকে শোকজ করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও সেটা পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন হাফিজ উদ্দিন। বিশেষ করে, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তিনি তা করতে সরাসরি অস্বীকৃতি জানান।

এছাড়া সমপ্রতি একাধিকবার প্রকাশ্যে দলের হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। একারণে তাকে শোকজ করা হয়েছে। আর বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি শওকত মাহমুদকে শোকজ করা হয়েছে দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে ‘সরকার পরিবর্তন আন্দোলন’র সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে।

বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে শোকজের জবাব দিয়েছেন শওকত মাহমুদ। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে তার একান্ত সহকারী আবদুল মমিন নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শোকজের জবাব পৌঁছে দেন। 

শওকত মাহমুদের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, তিন লাইনে তিনি তার জবাব দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শের বাইরে, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কাজে তিনি জ্ঞাতসারে সম্পৃক্ত ছিলেন না। এরপরও তার অজান্তে কোনো কাজে জড়িত থাকলে তার জন্য তিনি দুঃখিত।

দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে ‘সরকার পরিবর্তন আন্দোলন’র সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিএনপি, জামায়াত, ঐক্যফ্রন্ট ও বামসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও কিছু পেশাজীবী নেতা ‘সরকার পতন’র দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বলে বেশ কিছুদিন ধরে প্রচার করা হয়। এজন্য ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে বেছে নেয়া হয়। এ কর্মসূচিতে অংশ না নিতে শেষ মুহূর্তে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের কঠোর বার্তা দেয়া হয়। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে হাফিজ উদ্দিন ও শওকত মাহমুদ ওই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন। এ কারণে তাদের শোকজ করা হয়।

দলীয় সূত্র জানায়, হাইকমান্ডকে না জানিয়ে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে একটি মিছিল বের করে মুক্তাঙ্গনে গিয়ে অবস্থান নেয়। এই মিছিলে ছিলেন শওকত মাহমুদ। এছাড়া মিছিলের আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সমাবেশ করা হয়। এ কারণে তার বিরুদ্ধে শৃংখলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে।

হাফিজ উদ্দিনকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে দলকে বিভক্ত করে মহাসচিব হওয়া, বিভিন্ন সময়ে দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দায়িত্ব দেয়া হলে সেটা করতে অপারগতা প্রকাশ করা বিশেষ করে কৃষক দলের মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হলেও তা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অসম্মান করে বক্তব্য দিয়েছেন।

শওকত মাহমুদ শোকজের জবাব দিলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মেজর (অব.) হাফিজ কোনো জবাব দেননি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমার বক্তব্য শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বনানীর নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানাব। তার ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, শোকজের লিখিত জবাব সংবাদ মাধ্যমকে জানানোর পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেবেন হাফিজউদ্দিন। রাজনীতি থেকে তিনি অবসর নেয়ার ঘোষণা দিতে পারেন। তবে বিএনপির একটি অংশ তাকে সংবাদ সম্মেলন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদকে ২০১৬ সালে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। এর আগে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন।

আর মেজর (অব.) হাফিজ বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দলের ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫