বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্ট পাল্টে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে যে মেডিকেল রিপোর্ট দেয়ার কথা ছিল সেই রিপোর্ট এখন পর্যন্ত আসেনি। 

তিনি আরো বলেন, আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, সেটিকে সরিয়ে দিয়ে অন্য কোনো রিপোর্ট দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে লক্ষ্য করছি, খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে কারাগারে আটকে রাখার ব্যবস্থা করছে সরকার। এতে তার যে অধিকার ও মানবাধিকার আছে সেটা লঙ্ঘন করছে সরকার। খালেদা জিয়াকে একটি মিথ্যা মামলায় ২০ মাস ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। একই মামলায় অন্য আসামিরা সবাই জামিন পেয়েছেন কিন্তু তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। 

তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে যে মানবাধিকার পরিস্থিতি চলছে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি আর কখনোই ছিল না। গত ১০ বছরে শুধু ভিন্নমত ও ভিন্ন রাজনৈতিক চিন্তা পোষণ করার কারণে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষকে মামলার আসামি করা হয়েছে। মামলা দেয়া হয়েছে এক লাখ ৮ হাজার ১৪টি। 

তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সরকারের হাতে মারা গেছেন ১৫২৬ জন। গুম হয়েছেন আমাদের হিসেব মতে বিএনপির ৪২৩ জনসহ সর্বমোট ৭৮১ জন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক’ সরকার উন্নয়নের কথা বলে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। সরকার উন্নয়নের একটা মিথ তৈরি করে মানুষকে বোকা বানানো চেষ্টা করলে তা কখনো সফল হবে না।

মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তানসহ ১৫ দেশের প্রতিনিধি ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। গত দশ বছরে গুম-খুন হওয়া ২৭ জনের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী উপস্থিতি ছিলেন।

এ গোলটেবিল বৈঠকে আসা কূটনীতিকদের হাতে ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ১১৯ পৃষ্ঠার একটি বই দেয়া হয়। ‘Absence of Democracy and Systematic Human Rights Violation by State Apparatus’ বইতে গত ১০ বছরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ২৭টি মামলার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে থাকা মামলার সংখ্যাও তুলে ধরা হয়েছে।