মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের মুনাফা বাড়াতে এলপিজির মূল্যবৃদ্ধি: বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২২, ১৯:১৪

প্রতীকী ছবি
সিলিন্ডারের গ্যাসের বাড়তি দাম প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি দাবি এই মূল্য বৃদ্ধি অযৌক্তিক। মন্ত্রী ও উপদেষ্টা পর্যায়ের ব্যক্তিদের মুনাফার সুযোগ করে দিতেই সরকার বারবার এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এতে বলা হয়, ‘সভা মনে করে সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা পর্যায়ের ব্যক্তিদের ব্যবসায়িক সুবিধা ও মুনাফার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্যই অযৌক্তিকভাবে মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে।’
সভায় অবিলম্বে এলপিজি গ্যাসের বর্ধিত মূল্য বাতিল করে সহনীয় পর্যায়ে মূল্য নির্ধারণের দাবিও জানানো হয়।
গত ৩ এপ্রিল এলপিজির দাম বাড়ানোর সব শেষ আদেশ আসে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসে ১২ কেজির এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হবে ১ হাজার ৪৩৯ টাকা দরে।
এক বছর আগেও এই সিলিন্ডারের দর ছিল এক হাজার টাকার কাছাকাছি। দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ার কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধি।
গত বছরের ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো এলপি গ্যাসের দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন বলা হয়েছিল, আমদানিনির্ভর এই জ্বালানির সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে ভিত্তিমূল্য ধরা হবে। সৌদির দর ওঠানামা করলে ভিত্তিমূল্য ওঠানামা করবে। অন্যান্য কমিশন অরপরিবর্তিত থাকবে।
বিইআরসি আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে সৌদি আরমকো কোম্পানির প্রোপেন ও বিউটেনের দামের সাথে সমন্বয় করে প্রতি মাসে এলপিজির নতুন দর ঘোষণা করে আসছে।
বিশ্ববাজারে এলপি গ্যাসের দর রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এপ্রিলে সৌদি আরামকো টনপ্রতি প্রোপেন ৯৪০ ডলার ও বিউটেন ৯৬০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। ২০১৪ সালের পর আর কখনও এত বেশি দরে বেচাকেনা হয়নি রান্নার কাজে বহুল ব্যবহৃত জ্বালানি পণ্যটি।
সব শেষ দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবকে তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই যুদ্ধের কারণে সব ধরনের জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে।
ফখরুল জানান, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগের দাবিও জানায় বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
সভা মনে করে, সরকারের প্রশ্রয়ে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারসাজি, সড়ক-মহাসড়ককে পুলিশ ও সরকারি দলের চাঁদাবাজির কারণে দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অন্যদিকে জ্বালানি তেল, গ্যাসের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি করার ফলে পরিবহন ব্যয় বাড়ার কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে।
‘সরকারে নিজস্ব ব্যবসায়ীদের লোভ ও দুর্নীতির কারণে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি, শাক-সবজি, মাছ ও মাংসের ক্রমান্বয়ে মূল্য বৃদ্ধি ও গ্যাস, জ্বালানি তেল ও পানির মূল্য বৃদ্ধির ফলে কৃষক, শ্রমিক, নিম্ন আয়ের চাকরিজীবী, ছোট ব্যবসায়ীদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে’-বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।