ছাত্রলীগের সভাপতি করার আগে ইন্টারভিউ নিতাম: শেখ হাসিনা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ২১:১৮

প্রধানমন্ত্রী। ফাইল ছবি
যাদের
ছাত্রলীগের সভাপতি করা হতো তাদের একা একা ইন্টারভিউ নিতেন বলে জানিয়েছেন
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আজ
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে চলমান একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য আব্দুল
মান্নানের মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, মনে একটা কষ্ট নিয়ে আজ সংসদে দাঁড়াতে হলো। পরপর তিনজন
সংসদ সদস্য আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আমি ১৯৮১ সালে ফিরে আসার পর মান্নানকে
ছাত্রনেতা হিসেবে পেয়েছিলাম। ১৯৮৩ সালে তাকে ছাত্রলীগের সভাপতি করি। ছাত্রলীগের
সভাপতি করার একটা ঘটনা আছে। যাদের ছাত্রলীগের সভাপতি করা হতো আমি তাদের ইন্টারভিউ
নিতাম, একা একা। অনেকের ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে যখন মান্নানকে বলছি যদি
তোমাকে আমি না বানাই, তাহলে তুমি কী করবে? অনেকে হাউমাউ করে কেঁদে দিত।
কিন্তু একটি ছেলেকে পেয়েছিলাম সে বলে দিয়েছিল না বানালে কিছু করার নেই, আমি আপনার
সঙ্গে রাজনীতি করে যাব। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম তাকেই বানাব।
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, ওই সময়টা ছাত্রলীগের খুব খারাপ সময় ছিল। অনেকেই ছাত্রলীগ ছেড়ে চলে
গিয়েছিল ১৯৮২ সালে। সে কারণে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার খুব দরকার ছিল এবং তার সেই
সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল। সে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিল।
তিনি
বলেন, পরবর্তী সময়ে তাকে আওয়ামী লীগে নিয়ে আসি, আওয়ামী
লীগের প্রচার সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল। বগুড়ার মতো জায়গায় ওকে নমিনেশন
দিলাম। খুব কঠিন জায়গা ছিল, এলাকাটা দুর্গম এবং রাস্তাঘাট ছিল না। খুবই অনুন্নত
একটি জায়গা। সেখানে তাকে যখন নমিনেশন দিলাম,
মান্নান সেখানে থেকে জিতে আসল, পর পর
তিনবার সেখান থেকে সংসদ সদস্য।
স্মৃতিচারণ
করে শেখ হাসিনা বলেন, ঠিক মৃত্যুর দুইদিন আগে আমার সঙ্গে অনেক কথা বলল।
আমাদের সেন্ট্রাল কমিটিতে নানক আসছে,
ও আসতে পারেনি। বোধহয় মনে একটু দুঃখ
ছিল। আমি বললাম আমি তো তোমাদের কাউকে ফেলে দেইনি। তুমি আওয়ামী লীগে ছিলে এবং
তোমাকে আমি নমিনেশন দিয়েছি, সংসদ সদস্য হয়েছ। কথা বলার সময় দেখলাম তার শরীরটা একটু
খারাপ। আমি ওকে বললাম তোমার শরীর মনে হয় ভালো না, তুমি একটু ভালোভাবে চিকিৎসা কর।
ঠিক তারপরই হাসপাতালে ভর্তি।
তিনি
বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর আমি প্রতিদিন একবার ডাক্তার সৌরভের সঙ্গে কথা
বলতাম, যেদিন মারা গেল তার আগের দিন রাত ৯টার সময় ডাক্তার সৌরভের সঙ্গে কথা
বললাম। প্রতিদিন সৌরভের সঙ্গে কথা বলে ওর স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নিতাম। ওইদিনই
ডাক্তার বললেন আপা ওর শরীরের অবস্থা ভালো না। ওকে আমরা কিছু করতে পারব বলে মনে হয়
না। শরীরটা খুবই খারাপ। এমন অবস্থা ছিল যে,
আমি বলেছিলাম ওকে যদি বাইরে পাঠানো
যায়, ডাক্তার বলল যে বাইরে পাঠানোর অবস্থা নেই। পরদিন সকাল বেলায় মৃত্যুর
খবর। এটি সব থেকে দুঃখজনক।