সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় দুই-একজনের বিরোধিতার কারণে রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু। আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) জোট শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

রাষ্ট্রধর্ম বাতিল প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু বলেন, সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর সময় রাষ্ট্রীয় ধর্ম বাতিল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ২-১ একজন সদস্য ভেটো দেওয়ায় তা করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সুবিধাভোগী কারা ছিল? যারা ষড়যন্ত্র করেছে? জিয়া, মোশতাক জাতীয় পার্টির কাজ সেটা পরিষ্কার করে দেয়। সেই ষড়যন্ত্র এখনও আছে। কেননা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করেছে।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত আখ্যা দিয়ে আমু বলেন, ওই সময় আমাদের নেতৃত্ব কেন ঘোষণা দিতে পারল না, সে কথা আজকে বলতে চাই না।

এ নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এই নেতা বলেন, দুই বছর আগেও আমরা বলেছি। একটা বিচার বিভাগ হোক বা গণ কমিশন হোক, সেটা গঠন করে তদন্ত করে নেপথ্যের নায়কদের খুঁজে বের করা হোক।

আলোচনা সভায় একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল নায়ক জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে পাকিস্তানের ধারায় দেশ নেওয়া হয়েছিল। যে কারণে সংবিধান সংশোধন করে জিয়া বিসমিল্লাহ বসাল মাথার উপরে।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধ করেছিলেন। জিয়া সেটা আবার পুনরুদ্ধার করে। এখনও সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রয়েছে। তার মানে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি রয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এখন সেই সংবিধান ধারণ করে কি?

জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ছিল নিছক কোনো ব্যক্তির হত্যা নয়। বাংলাদেশকে দ্বিতীয় পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র। সেই কাজ জেনারেল জিয়াউর রহমান পরিকল্পিতভাবে করেছেন। এরশাদ করেছেন। সংবিধানে এখনও সাম্প্রদায়িকতা-সামরিক সরকারের ক্ষত আছে। এগুলো ধীরে ধীরে দূর করতে হবে।

কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ মেনন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। তার পক্ষে সূচনাপত্র পড়ে শোনান দলের নেতা কামরুল আহসান। এতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্র প্রকাশ করতে জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করার দাবি জানানো হয়।