Logo
×

Follow Us

রাজনীতি

জি এম কাদেরকে জুতাপেটা করার হুমকি রাঙ্গার

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২২, ১৭:৪১

জি এম কাদেরকে জুতাপেটা করার হুমকি রাঙ্গার

জি এম কাদের ও মসিউর রহমান রাঙ্গা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদেরকে জুতাপেটা করে দলীয় কার্যালয় থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুম‌কি দিয়েছেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা।

আজ রবিবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে উপজেলা দিবস উপলক্ষে রওশন এরশাদের অনুসারীদের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা ব‌লেন। এসময় জি এম কাদের আর বিরোদীদলীয় উপনেতার আসনে বসতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাপা থে‌কে সদ্য পদ হারানো এ নেতা। 

মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, সংসদে বেগম রওশন এরশাদের চেয়ারের পাশে (বি‌রোধীদলীয় উপনেতার আসন) তিনি (জি এম কাদের) আর বসতে পারবেন না। সেখানে বসবেন অন্য কেউ। সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। জি এম কাদেরের চেয়ার কেউ রক্ষা করতে পারবে না।

তিনি বলেন, আগামী ২৬ নভেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বের পরিবর্তন হবে। সেখান থেকে বিদায় নেবেন জি এম কাদের। তা সাথে তিনজন এমপি ছাড়া আর কেউ নেই। আগামী ২৬ নভেম্বর রওশন এরশাদের ডাকা জাতীয় কাউন্সিলের আগেই এমপিরা কোন দিকে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ বিষয় নিয়ে আর সংশয় থাকবেন না। 

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ আরো বলেন, বনানী ও কাকরাইল অফিস আমাদের হবে। জি এম কাদেরকে জুতাপেটা করে ওখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।

জি এম কাদেরকে ‘অবৈধ চেয়ারম্যান’ আখ্যা দিয়েছেন তার সাথে একই কাউন্সিলে মহাস‌চিব নির্বা‌চিত হওয়া ম‌সিউর রহমান রাঙ্গা। পরে তাকে মহাস‌চিব পদ থে‌কে সরিয়ে দেন জি এম কাদের। রওশন এরশাদকে সমর্থন করে গত মাসে দলের অন্যান্য পদও হারান তি‌নি। 

জি এম কাদের মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন অভিযোগ করে রাঙ্গা বলেছেন, জাতীয় পার্টির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন জি এম কাদের। সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫ কোটি করে টাকা নিচ্ছেন। কারচুপি করে যদি কাউকে নির্বাচনের মনোনয়ন দেবেন মনে করেন; তাহলে এখনই দিয়ে দেন। কোনো অসুবিধা নেই।

তিনি বলেন, বিএনপির জোটে যাবেন, সে জন্য টাকা নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবেন, সেখান থেকেও টাকা নিচ্ছেন। দুই নৌকায় পা রেখে রাজনীতি হয় না। আপনাকে (জি এম কাদের) বিএনপিও সন্দেহ করে, আওয়ামী লীগও সন্দেহ করে। আপনি কোন দিকে যাবেন ঠিক নেই। যেদিকে মাল (টাকা) বেশি দেবে, সেই দিকে যাবেন। একটা মানুষের কত টাকার দরকার? বুঝে না এখনো। কত টাকা লাগে বাঁচতে মানুষের।

রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি মূলধারা বলে দাবি করে রাঙ্গা বলেন, মূল ধারায় ফিরে আসেন। জিএম কাদেরের জাতীয় পার্টি কখনো মূলধারায় নেই। এটা একটা ব্যবসায়ী জাতীয় পার্টি হয়ে গেছে। সেখানে গেলে ব্যবসা করতে হবে, পয়সা দিতে হবে। আপনাদের বলব, শান্ত থাকেন, যদিও আমি নিজেও শান্ত থাকতে পারি না। মানুষের গায়ে হাত উঠে যায়। এটা আমার একটা বাজে অভ্যাস।

মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, জি এম কাদের কখনো রাজনীতিবিদ ছিলেন না। ছিলেন পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের একজন কর্মচারী। সেখান থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। পেট্রোলিয়াম করপোরেশন থেকে দুর্নীতির দায়ে তার চাকরি চলে যায়। অথচ তিনি নিজেকে ক্লিন ইমেজ হিসেবে দাবি করেন। নামের পেছনে জনবন্ধু লেখেন, তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় ‘জনশত্রু’ হিসেবে পরিচিত। এরশাদ সাহেব তাকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে পাঁচবার বহিষ্কার করেছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকে এরশাদ সাহেবের চিহ্ন মুছে ফেলতে চাচ্ছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমি যদি জাতীয় পার্টি নাও করি, থাকব তো অবশ্যই। আমার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দেশের এমন কোনো জায়গা নেই যেখান তিন তলা একটি অফিস নেই। আমি সেই সমিতির তিনবারের প্রেসিডেন্ট। সেটা আমাকে জাতীয় পার্টি করেনি। উল্টো সংসদে তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়ে কথা বলেছে। কিন্তু আমি কিছু বলিনি। এটা সে (জিএম কাদের) বলতেই পারে। চুন্নুও (মজিবুল হক চুন্নু) বলেছে।

চুন্নুর খাওয়া নেই উল্লেখ করে রাঙ্গা বলেন, চন্নু-মন্নুর খাওয়া নেই, বলে দিলাম। সময় থাকতে যা খাওয়ার খেয়ে নেন। ৩০ তারিখের পরে খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এখন থেকে হিসাব করেন কোন দেশে পালাবেন। আমাদের কোনো দেশে পালাতে হবে না। আমরা এই দেশেই থাকব।

জাপার সাবেক প্রেসি‌ডিয়াম সদস্য এস এম আলমের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বক্তৃতা করেন সাবেক নেতা কাজী মামুনুর র‌শিদ, জিয়াউল হক মৃধা, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, এম এ গোফরান, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন রাজু প্রমুখ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫