
প্রায় প্রতিটি মানুষের জীবনে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকে বন্ধুত্ব, ভালোবাসা কিংবা প্রেমের। সেগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে একেক জন একেকভাবে উপস্থাপন করি। কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা খুব লাজুক এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক সবার কাছে গোপন রাখতে চায়। আবার অনেকে রয়েছেন যারা প্রিয়জনের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তকে সবার কাছে প্রকাশ করতে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ব্যক্তিগত ছবি শেয়ার করতেও দ্বিধাবোধ করেন না।
দু’ধরনের ব্যক্তির জীবনে সম্পর্কের ভালো-মন্দ প্রভাব পড়ে। প্রথমত, সম্পর্কে অতি গোপনীয়তার কারণে অনেক সময় ভালো লাগার কথা বলাই হয়ে ওঠে না, ফলে অন্য কারও সঙ্গে যদি ভালো লাগার মানুষটি সম্পর্কে জড়িয়ে যায়, তখন তাকে আফসোস করতে হবে। তাই যতই দ্বিধাই থাকুন না কেন, ভালো লাগার কথা সরাসরি বলে ফেলাই ভালো।
দ্বিতীয়ত, যারা ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিভিন্ন মুহূর্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। তারা কিন্তু অন্য মানুষের হিংসার শিকার হতে পারেন। হিংসায় অনেক বন্ধু-বান্ধবী চেষ্টাও করে কীভাবে সম্পর্কে ছেদ ঘটানো যায়। এদের বিচ্ছেদ হলে এতটা জানাজানি হয় যে, তখন একা জীবন যাপন করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বিশাল হতাশায় পর্যবসিত হয় জীবন। এদের পরবর্তী দাম্পত্য জীবনও কঠিন হয়ে পড়ে।
যে কোনো সম্পর্কে সন্দেহ বাতিক, ঈর্ষা এগুলো খুব সাধারণ বিষয়। তবে এগুলো নির্যাতনে পৌঁছলে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা বিশাল দায়। পারস্পরিক বোঝাপড়া একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে সবার প্রচুর ছেলে-মেয়ে বন্ধু থাকে। ফরমাল যোগাযোগ অল্প হাসি তামাশা বা কাজের খাতিরে সম্পর্কগুলোকে যদি সাধারণভাবে না নিতে পারেন তাহলে আপনি সারাজীবন অসুখীই রয়ে যাবেন। মনে রাখতে হবে আপনার সঙ্গীটি আপনার সঙ্গী ছাড়াও একজন সামাজিক জীব। তাকে বিভিন্ন কারণে যোগাযোগ রাখতে হয় প্রচুর মানুষের সঙ্গে। আর আপনি নিজেকে মন কারাগারে বন্দি রাখলে সেটা একান্ত আপনার সমস্যা, ভুলে যাবেন না আপনারা একে অপরকে সুখে রাখার ওয়াদা করে একটা সম্পর্কে আছেন, একে অপরের অসুখের কারণ হবেন না।
যাকে বিশ্বাস করেন না, তার সঙ্গে সংসার করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো প্রয়োজনই হয় না, সারাদিন অফিস করে বাসায় ফেরার পর স্বামীর সব কিছু যদি গোয়েন্দার মতো তল্লাশি করার বাতিক থাকে কিংবা তার মেসেঞ্জার হোয়াটসআপ চেক করার অভ্যাস থাকে তাহলে ধরেই নিন ঘরে ঢোকারআগে সে সব ডিলিট করেই ঢুকেছে, এদিকে স্ত্রীর বস থ্যাংকস দিলে কিংবা কাজে প্রশংসা করলে যদি আপনার প্রচণ্ড রাগ হয়, তবে আপনিও আপনার নারী সহকর্মীকে কাজে বাহবা দিবেন না। সবসময় মনে রাখা জরুরি বিবাহিত জীবনটা দ্বিমুখী, দু’জন দু’জনের সঙ্গে সমান আচরণ করা জরুরি। একে-অপরের সঙ্গী হয়েই তিবাচক আচরণের মাধ্যমে যেমন সুখী দাম্পত্য জীবনযাপন সম্ভব। তেমনি সুখী জীবন পেশাগত জীবনে সফলতার পেছনে অনুপ্রেরণা যোগায়।
সম্পর্ক নিয়ে কোনো অশান্তিতে থাকা চলবেনা, হেলদি ডায়েট, শরীরচর্চার পাশাপাশি যত্ন নিন সম্পর্কের, একে অপরের প্রশংসা করুন, গল্প করুন, বোঝাপড়া বাড়ান, স্বচ্ছ থাকুন নিজের কাছে। ছোট ছোট উপহার, পত্র লিখন, গেম খেলা, সিনেমা দেখা, একে অপরের পছন্দের কাজ করা, রান্না করা কিংবা বার্ষিক ভ্রমণ সম্পর্ককে মজবুত করে, দু’জনকে এক করে ভাবতে হবে, একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয় প্রতিবিম্ব হয়ে সুখে থাকতে হবে। যার ফলে সুন্দর হবে আপনার পৃথিবী। সত্যিকারের সুখের হাসি তারাই হাসতে পারে, যারা ব্যক্তিগত সম্পর্কে যত্নবান ও সুখী থাকে।