বিয়ের প্রতি অনীহা কেন

‘শাদি কা লাড্ডু, যো খায়ে ও ভি পাস্তায়ে, যো না খায়ে ও ভি পাস্তায়ে।’ মানে বিয়ের লাড্ডু খেলেও আফসোস করতে হবে, না খেলেও। তবে আজকের তরুণ-তরুণীরা বিয়ের অস্তিত্বকেই তাদের জীবন থেকে চিরতরে ঘুচিয়ে দিতে চাইছে। এত এত ভালোবাসার মাঝেও অনেকেই একা থাকছেন, তাও আবার খুব স্বাচ্ছন্দ্যে। কিন্তু কেন এমনটা করছেন, আর কীভাবে তারা পারছেন জীবনের বসন্ত সময় একা কাটাতে। 

বিয়ে একটি সামাজিক বন্ধন, যার দ্বারা একটি পরিবারের সৃষ্টি। সেখানে তৈরি হয় প্রেম, ভালোবাসা, মায়া-মমতা। তবে এক সঙ্গে থাকতে গেলে একটু মনোমালিন্য হতেই পারে। আর সেখান থেকেই চলে আসে ঝগড়া-বিবাদ। এসব দেখেই অনেকের বিয়ের প্রতি অনীহা চলে আসে। এই বিয়ে ভীতি বা অনীহা এক ধরনের মানসিক রোগ, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘গ্যামোফোবিয়া’ অর্থাৎ প্রতিশ্রুতিতে ভীতি। কেন এমন মানসিক অবস্থা হয়?

পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি
এমন মানসিক অবস্থা সাধারণত নির্ভর করে পরিবেশ, পরিস্থিতি ও মানসিক বিকাশের ওপর। এ ছাড়াও সম্পর্ক নিয়ে পূর্বের খারাপ অভিজ্ঞতা বা মা-বাবা, ভাই-বোন, কাছের বন্ধু কিংবা সহকর্মীদের বৈবাহিক অশান্তিও এই ভয়ের সৃষ্টি করতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের মানুষ মনে করেন নতুন সম্পর্ক শুরু হলে ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব হতে পারে। আর এর থেকেই তারা মনে করে নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়াটা একেবারেই ভুল সিদ্ধান্ত। 

স্বাধীনতা
সবাই স্বাধীন থাকতে চায়। অনেকেরই ধারণা বিয়ের আগমুহূর্ত পর্যন্ত স্বাধীন জীবন অতিবাহিত করা যায়। এজন্য তাদের মনে দ্বিধা কাজ করে যে, বিয়ের পরে এই স্বাধীনতা নাও থাকতে পারে। পাশাপাশি অনেক বন্ধুর বিবাহপরবর্তী অবস্থার কথা ভেবেও এটা মাথায় আসতে পারে।

হাজারো দায়িত্ব
বিয়ে বলতেই মাথায় চলে আসে হাজারো দায়িত্ব। বিশেষ করে ছেলেরা মনে করতে থাকে, বিয়ে মানেই হাজার দায়িত্ব মাথায় চাপিয়ে নেওয়া। অন্যদিকে মেয়েরা ভাবতে থাকে, শ্বশুরবাড়ি সামলানো এবং তাদের সঙ্গে মানিয়ে চলার দায়িত্ব খুব মুশকিল। আর এই আকাশ-পাতাল অযৌক্তিক ভাবনায় তারা সম্পর্ক শুরুর আগেই ধরে নেন যে, বিয়ে ভেঙে যাবে।

আমাকে আমার মতো থাকতে দাও
এমন নয় যে-বিবাহিত লোকেরা স্বাধীন নন, কিন্তু ব্যক্তিস্বাধীনতার চূড়ান্ত চর্চা বোধহয় বিয়ের পর হয়ে ওঠে না। অনেকটা ডানা থাকলেও ওড়ার অভ্যাস চলে যাওয়ার মতো। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে-বিয়ের পর যে কোনো সিদ্ধান্তেই সঙ্গীর পছন্দ-অপছন্দ, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদিকে প্রাধান্য দিতে হয়, যার ফলে বিয়ের আগের সময়ের মতো স্বাধীনতা পাওয়া সম্ভব হয় না। কিছুটা সমঝোতা করতে হবে ভেবেই বিয়ে থেকে পিছিয়ে পড়ে অনেকে।

আর্থিক সমস্যা
অনেক পুরুষই অর্থনৈতিক কারণে বিয়ে করতে রাজি হন না। বিয়ে করতে অনেক টাকার প্রয়োজন, স্ত্রীর দেনমোহর ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা ব্যয়ের কারণেও বিয়ের প্রতি অনীহা দেখা যায়। আর্থিক সমস্যাকে বিয়ে না করার একটি অন্যতম কারণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। 

সেকেলে সংস্কৃতি ভাবা
বিয়ে নিয়ে সমাজের এক গ্রুপের ধারণা এটি সেকেলে সংস্কৃতি। বিবাহ হচ্ছে ছেলে-মেয়েদের লালন-পালন এবং সম্পর্কের অঙ্গীকার নির্দেশ করার রক্ষণশীল প্রতিষ্ঠান। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা মনে করেন বিয়ে করা একেবারেই ভুল সিদ্ধান্ত।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //