বিশ্ব ইজতেমা
প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে, স্বাস্থ্য বিভাগের ছুটি বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৫৭

বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুরে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। বিশাল এই ধর্মীয় জমায়েতকে সফল করতে চলছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি।
ইতোমধ্যে জেলাভিত্তিক খিত্তার তালিকা সম্পন্ন হয়েছে এবং ময়দানের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ইজতেমার প্রথম পর্বে যোগ দেওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেছেন।
তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব ইজতেমার কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
এবার ছয় দিনের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের তিন দিনের ইজতেমা শুরু হবে আগামী ১৩ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে। এ পর্বে মাওলানা জোবায়েরপন্থি মুসল্লিরা ইজতেমায় অংশ গ্রহণ করবেন। চার দিন বিরতির পর আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু হবে। আর এ পর্বে অংশ গ্রহণ করবেন সাদপন্থি মুসল্লিরা।
ইজতেমা মাঠের দায়িত্বে নিয়োজিত আয়োজক কমিটির অন্যতম মুরুব্বি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর নূর জানান, তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বিদের পরামর্শক্রমে ইজতেমার যাবতীয় প্রস্তুতি কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। এখানে বিদ্যুৎ, পানি, প্যান্ডেল নির্মাণ, গ্যাস সরবরাহ প্রতিটি কাজেই আলাদা আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এছাড়া তুরাগ নদে মুসল্লিদের পারাপারের জন্য সেনাবাহিনী বেশ কয়েকটি পন্টুন স্থাপন করেছে। দুপর্বের বিশ্ব ইজতেমা অংশ নেওয়ার জন্য পুরো ইজতেমা ময়দানকে জেলাওয়ারি নির্দিষ্ট খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। শেষ হয়েছে বয়ান মঞ্চ নির্মাণকাজও।
এবারের বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে পাঁচ জোড়া বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সোমবার বাংলাদেশ রেলওয়ে (পূর্বাঞ্চল) এর এসিওপিএস (পি) চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট কামাল আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইজতেমার প্রথম পর্বে ১৩ জানুয়ারি থেকে আখেরি মোনাজাত এবং দ্বিতীয় পর্বে ২০ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত বিভিন্ন গন্তব্যে এসব সেবা চালু হবে।
পাশাপাশি বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে মুসল্লিদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিতকরণ, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে টঙ্গী, বিমানবন্দর, তেজগাঁও, কমলাপুর, টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি অফিসারসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন থাকবে বলে জানান মো. শহিদুল ইসলাম।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে গাজীপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত সোমবার দুপুরে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক নোটিশ প্রদান করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ঐ আদেশ বলবৎ থাকবে।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন মো. খায়রুজ্জামান জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের সেবা কার্যক্রম প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। মুসল্লিদের বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করণে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগ পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন কাজ চলছে। এখান থেকে ২৪ ঘণ্টা মুসল্লিদের বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিত্সাসেবা প্রদান করা হবে।
প্রতিটি ক্যাম্পে পালা করে দুজন চিকিৎসক, দুজন সহকারী ও দুজন অফিস সহায়ক কাজ করবেন। হোন্ডা কারখানা গেট, বাটা সু গেইট, মুন্নু নগর, বিদেশি তাঁবুতে এবং টঙ্গী জংশন এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের এসব ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করা হবে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান জানান, ইজতেমায় আগত মুসল্লিগণের সেবা প্রদানে প্রশাসনসহ সব বিভাগের কর্মকর্তারা প্রস্তুত রয়েছেন।