
প্রতীকী ছবি
পৃথিবীর কঠিন কাজগুলোর একটি হল মানুষের মন জয় করা। আবার এটি সবচেয়ে সহজও বটে। সৃষ্টির আদি থেকে আজ অব্দি যত নবী রাসুলের আগমণ হয়েছে এই ধরায় তাদের সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি ধৈর্য। এবং অধিকাংশ ধৈর্য ছিল প্রতিশোধ নেওয়া থেকে বিরত থাকার মধ্য দিয়ে।
প্রতিশোধ নেওয়ার পেছনে মানবিক চাহিদা হচ্ছে আত্মার তৃপ্তি। কোন ব্যক্তি যখন অন্য কারো দ্বারা আক্রান্ত হয়, তখন তার মনে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি বিচরণ করে প্রতিশোধ। সার্বিক বিচারে প্রতিশোধ বৈধ হলেও মানবিক বিচারে এটি সামান্য আলোচনার দাবি রাখে। তবে কোরাআন মাজীদ প্রতিশোধকে নানাভাবে নিরুৎসাহিত করেছে এবং প্রতিশোধের স্পৃহাকে নিবারণের জন্য উৎসাহিত করা করেছে।
মহান আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে কঠিন সময়েও জাতির জন্য এই শিক্ষাটি দৃষ্টান্ত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।
এ সম্পর্কে কোরাআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘মহান রবের অনুগ্রহে আপনি তাদের প্রতি কোমল হয়েছেন। আপনি যদি কঠোর হৃদয়ের অধিকারী হতেন, তাহলে তারা আপনার কাছে আসত না। একই আয়াতে এরপর বলা হয়েছে: আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন। তাদের জন্য রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং তাদের সাথে পরামর্শ করুন।’ (সুরা আলে ইমরান ১৫৯)
আল্লাহ তাআলা মানুষকে আদেশ দিয়েছেন, যেন একে-অপরকে ক্ষমা করে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘যদি তোমরা ভালো কিছু প্রকাশ করো কিংবা গোপন করো অথবা মন্দ ক্ষমা করে দাও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১৪৯)
ক্ষমাকারীকে আল্লাহতাআলা বিশেষভাবে পুরস্কার দেবেন। পরস্পরের মধ্যে বিরোধ মেটানোকারী আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর মন্দের প্রতিফল মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা শুরা, আয়াত: ৪০)
ক্ষমা করলে কারও মর্যাদা কমে না। বরং বহু গুণে ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, সদকা করলে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে, তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (মুসলিম, হাদিস: ২৫৮৮)