Logo
×

Follow Us

ধর্ম

বিসমিল্লাহর তাৎপর্য ও দর্শন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:৫২

বিসমিল্লাহর তাৎপর্য ও দর্শন

‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’। ছবি: সংগৃহীত

কয়েকটি শব্দ দ্বারা গঠিত বাক্য ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’। এটি একটি পবিত্র আয়াত, পবিত্র তাসবিহ এবং পবিত্র দোয়া। বিসমিল্লাহর ভেতর মহান আল্লাহর সত্তাগত নামসহ তিনটি নামের অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সত্তাগত নাম ‘আল্লাহ’, গুণবাচক নামসমূহের অন্যতম নাম ‘রহমান’ ও ‘রহিম’। এ কারণে এর তাৎপর্য অনেক। রাব্বুল আলামিন এতে অসীম বরকত ও প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন। এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে- ‘পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।’

আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ দিয়ে শুরু করার নির্দেশ দিয়ে মূলত বান্দার কাজের রুখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কাজের শুরুতে বান্দার ‘বিসমিল্লাহ’ বলার অর্থ হচ্ছে, সে এই প্রত্যয় ব্যক্ত করছে যে, আমার কোনো কাজ আল্লাহর ইচ্ছা ও সাহায্য ছাড়া হতে পারে না। এর দ্বারা আল্লাহর সঙ্গে মুমিনের কাজের সম্পর্ক স্থাপন হয়। এবং বান্দার জাগতিক কাজও আল্লাহ তায়ালার নিকট ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়।

রাসুল (সা.) বলেছেন, 'জিবরাঈল (আ.) যখনই আমার কাছে অহি নিয়ে আসতেন, তিনি বিসমিল্লাহ পড়তেন'- (দারে কুতনি)। কোরআনের একটি সুরা ছাড়া সব সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ রয়েছে। হাদিসের কিতাবগুলো শুরু করা হয়েছে বিসমিল্লাহ দিয়ে। 

'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম' -এর ঐতিহাসিক পটভূমি

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম- এ বাক্যটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেছেন, নাবিয়্যিনা হজরত সুলাইমান আলাইহিসসালাম। সাবা নগরীর রানি বিলকিসের কাছে লেখা চিঠিতে তিনি এ বাক্যটি ব্যবহার করেছেন। পবিত্র কুরআনের সুরা নামলের ২৯-৩০ নম্বর আয়াতে সে চিঠির বিবরণ উল্লেখ রয়েছে। এরপর প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া আর কোনো নবীকেই বিসমিল্লাহর বিধান দেয়া হয়েছে বলে প্রমান পাওয়া যায় না। প্রাথমিক যুগে প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম 'বিসমিকাল্লাহুম্মা' লিখতেন। তারপর সুরা হুদের ৪১ তম আয়াতে 'বিসমিল্লাহি মাজরেহা' নাজিল হলে তিনি কেবল 'বিসমিল্লাহ' লিখতে শুরু করেন। এরপর সুরা বনি ইসরাইলের ১০ নম্বর আয়াতে 'কুলিদউল্লাহা আওয়িদ্উর রাহমান' আয়াত অবতীর্ণ হলে তিনি 'বিসমিল্লাহির রহমান' লিখতে শুরু করেন। এরপর সুরা নামলের ৩০ তম আয়াতে পুরো বিসমিল্লাহ নাজিল হলে তিনি পুরো 'বিসমিল্লাহ' লেখার রীতি প্রচলন করেন। (রুহুল মাআনি ও আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস)।

বিসমিল্লাহর তাৎপর্য ও দর্শন

ইসলাম কেবল পারলৌকিক ধর্ম নয়; এ ধর্মে ইহকাল ও পরকালের মধ্যে যৌক্তিক ভারসাম্য স্থাপন করা হয়েছে। ইসলামের নামাজ ও ইবাদত মসজিদের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। পৃথিবীর যে কোনো পবিত্র স্থানে নামাজের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ ধর্মে বৈরাগ্যবাদ, কর্মহীন তপস্যার অনুমতি দেয়া হয়নি। ইবাদতের জন্য ইহকালকে বর্জন করতেও বলা হয়নি। বরং এমন দুর্লভ ব্যবস্থাপত্র দেয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে দুনিয়ার কার্যাদিও দ্বীনের কাজে রূপান্তরিত হয়। বাহ্যত মানুষ পার্থিব কাজ করছে, অথচ সে পরকালের উদ্দেশ্যে পরমাত্মার ডাকে সাড়া দিচ্ছে। ইসলামী শিক্ষা অনুসারে প্রতিটি মুহূর্তে, প্রতিটি স্থানে, প্রতিটি কাজে এমন কিছু জিকির ও দুআ বাতলে দেয়া হয়েছে, যার উপর আমল করতে কোনো পরিশ্রম হয় না। কাজেও ন্যূনতম ব্যাঘাত ঘটে না।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫